“শিক্ষক-শিক্ষার্থীর স্বপ্ন পূরণের বাতিঘর হলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান” “শিক্ষক-শিক্ষার্থীর স্বপ্ন পূরণের বাতিঘর হলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান” – Narailnews24.com-নড়াইল নিউজ ২৪
রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ১১:২৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘সেফ এক্সিট’, নিয়ে এত আলোচনা কি বলছেন উপদেষ্টারা ? সারাদেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি কাল থেকে নড়াইলে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন শুরু নড়াইলে বাবা-ছেলের মারামারি ঠেকাতে গিয়ে আসামী হলেন ১৪ জন, প্রতিবাদে মানববন্ধন লোহাগড়ায় ট্রেনের ধাক্কায় রিয়াজুল নামে যুবকের মৃত্যু নড়াইলে গানে নৃত্যে ও কবিতায় রবীন্দ্রনাথ-কাজী নজরুলকে স্মরণ সন্ত্রাসবিরোধী আইনে বাংলাদেশে নতুন করে দমন-পীড়ন করছে – এইচআরডব্লিউ দেশের সব বিমানবন্দরে বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ নড়াইলে টাইফয়েড ক্যাম্পেইনে ২ লাখ ১৩ হাজার শিশুকে টিকা দেয়ার লক্ষমাত্রা নির্ধারন একটি দল বেহেস্তের টিকিট বিক্রি করছে – মনিরুল ইসলাম

“শিক্ষক-শিক্ষার্থীর স্বপ্ন পূরণের বাতিঘর হলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান”

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ১ অক্টোবর, ২০২৫
লেখক উজির আলী । সংগৃহীত ছবি: নড়াইল নিউজ ২৪.কম

মোঃ উজির আলী
শিক্ষা জীবনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন পূরণের বাতিঘর হিসেবে পরিচিত। একটি গ্রাম, একটি এলাকা, একটি ইউনিয়ন, একটি পৌরসভা, একটি উপজেলা, একটি জেলা, একটি বিভাগ তথা একটি রাষ্ট্রের উন্নয়নে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব অপরিসীম। আবার এভাবে বলা যায় যে, একটি এলাকা তথা একটি রাষ্ট্রকে আলোকিত করতে যে প্রদীপের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি তার নাম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়া শিক্ষা ব্যবস্থা তথা শিক্ষার্থী জীবন কল্পনাতীত। যেকোনো এলাকায় অজ্ঞতার অন্ধকার দূর করে শিক্ষার আলো জ্বালানোর জন্য ঐ এলাকার শিক্ষানুরাগী মানুষের মহান উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় ঐ এলাকার আলোর প্রদীপ খ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানটি সুন্দরভাবে পরিচালনার জন্য এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত হয় একটি পরিচালনা কমিটি। এরপর নিয়োগ দেওয়া হয় শিক্ষক-কর্মচারী। প্রতিষ্ঠান মাধ্যমিক হলে সেখানে থাকে একজন প্রধান ও একজন সহকারী প্রধান শিক্ষক, আনুপাতিক হারে সহকারী শিক্ষক এবং প্রয়োজনীয়তা অনুসারে কর্মচারী। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য রয়েছে নিজেস্ব নীতিমালা। পেটের ক্ষুধা মেটানোর জন্য যেমন খাদ্য প্রয়োজন তেমনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খাবার হলো শিক্ষার্থী। শিক্ষক শিক্ষার্থী মিলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হয়ে ওঠে সুরভিত ফুলের বাগান। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলো শিক্ষার্থীর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাদানের আতুরনিবাস। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনের একটি কাঠামো প্রদান করে, যার ফলে শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত বিকাশ, সামগ্রিক শিক্ষা এবং সামাজিক অগ্রগতি সাধিত হয় । শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের যুক্তিবাদী চিন্তাভাবনা প্রসার ঘটিয়ে সমাজে আলোকিত ও সুনাগরিক মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভে সহায়তা করে। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মানবসম্পদ উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন এবং জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট বিষয়ে জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করে, ফলে তারা তাদের পছন্দের পেশা গ্রহণে করে দেশের কল্যাণে কাজ করতে পারে। শিক্ষার্থীদের স্বপ্নের এ প্রতিষ্ঠান তাদের শারীরিক, মানসিক, নৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে ব্যাপক সহায়তা করে, ফলে তারা সমাজের এক একজন অনুপ্রেরণাকারী মহান মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমাজের নানান অসংগতি ও কুসংস্কার দূরীকরণ এবং সামাজিক উন্নয়নের পথ সুগম করে অজ্ঞতার অন্ধকার দূর করে মানুষকে জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করে। এজন্য সমাজে সামাজিক ও পারস্পারিক সম্প্রীতি ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। প্রতিটি জাতির জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সমৃদ্ধির বাহক হলো সংস্কৃতি। আর এই সংস্কৃতি ও সভ্যতার বিকাশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব আপরিসীম। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংস্কৃতি ও সভ্যতার গুরুত্ব এক প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মের নিকট সুকৌশলে পৌছে দিতে সহায়তা করে । শিক্ষার আলো খ্যাত এই প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীর জীবন তথা মানবজীবনকে একটি সুসংহত, সুশৃঙ্খল ও সহায়ক পরিবেশ প্রদান করে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শুধু শিক্ষার্থীদের কাছে বিদ্যাপীঠই নয়, বরং এটি তাদের জীবনের শ্রেষ্ঠ স্মৃতিবিজড়িত জাদুঘর। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিটি শিক্ষার্থীর কাছে তাদেরন জীবনের শ্রেষ্ঠ স্মৃতির চিহ্নের প্রতীক হিসেবে মূল্যায়িত হয়। বর্তমানে শিক্ষার্থীবৃন্দ প্রতি বছরে নবীন -প্রবীণ শিক্ষার্থীর মিলনমেলা, ব্যাচ ক্রিকেট বা ফুটবল খেলা এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে নিজের পরিচয় ফুটিয়ে তুলছেন নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। তাই শিক্ষার্থীর জীবেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব অপরিসীম। শুধু শিক্ষার্থী নয়, শিক্ষকের জীবনে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠিানের গুরুত্ব অপরিহার্য। শিক্ষকের মানসম্মান, রিজিক ও স্বপ্ন পূরণের বাহক হিসেবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কাজ করে। শিক্ষকগণ তাদের কঠোর পরিশ্রম ও সুক্ষ্ম পরিকল্পনার মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সুচারুভাবে সাজিয়ে তোলেন, ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তৈরি হয় শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ। আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়তে প্রয়োজন আদর্শ শিক্ষক। কেননা আদর্শ শিক্ষকগণ সব সময় স্বপ্ন দেখেন যে, তাদের কর্মের মাধ্যমে প্রিয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে পারলেই তাঁরা প্রতিষ্ঠিত হবেন। তাই শিক্ষকগণের জীবনে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় অনস্বীকার্য। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষক- সমাজ গঠনে সরাসরি অবদান রাখতে পারেন যা অন্য পেশায় এতটা সম্ভব নয়। । শিক্ষক, সমাজে তথা রাষ্ট্রে ভালো চিন্তার আলো ছড়িয়ে দেন, যা তাঁকে সম্মানিত ও সামাজিক নেতাতে পরিণত করে। শিক্ষকের পেশাগত স্থিতিশীলতা ও জীবিকা নির্বাহের প্রধান ক্ষেত্র হলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আত্মতৃপ্তি, পরিপূর্ণতা ও শিক্ষার্থীদের সাফল্য শিক্ষকের সবচেয়ে বড় অর্জন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষক আত্মতৃপ্তি পান, কারণ তাঁর জ্ঞান, মেধা ও শ্রম ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গড়ে তোলে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষককে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ করে দেয় শ্রেণি, বিভাগ বা পুরো প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে। এছাড়া গবেষণা ও নতুন জ্ঞান সৃষ্টির ক্ষেত্র হিসেবেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়া শিক্ষক তাঁর জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও মেধাকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারেন না। শিক্ষক তাঁর সুপরিকল্পিত জ্ঞানদানের মাধ্যমে জীবনের সবচেয়ে বেশি ও শ্রেষ্ঠ সময় প্রদান ও কঠোর শ্রমের ফসল হিসেবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে চমৎকার ফুলের বাগিচার মতো সাজিয়ে তোলেন। তাই সুস্পষ্টভাবে বলা যায় যে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই শিক্ষকের জীবনের পেশাগত, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও নৈতিকতা উন্নয়নের মূলভিত্তি। আর শিক্ষার্থীর জীবনের সকল স্বপ্ন পূরণের বাতিঘর হলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

লেখক: মোঃ উজির আলী
প্রধান শিক্ষক
নড়াইল কালেক্টরেট স্কুল, নড়াইল।

বিঃদ্রঃ এই লেখার সাথে নড়াইল নিউজ ২৪.কম এর কোন সম্পর্ক নেই।

© এই নিউজ পোর্টালের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

ফেসবুকে শেয়ার করুন

More News Of This Category
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin
error: Content is protected !!