নড়াইল নিউজ ২৪.কম ডেস্ক:
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের লক্ষ্যে যোগ্য ব্যক্তিদের নাম সুপারিশের জন্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গঠিত সার্চ কমিটি ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করেছে। কমিটির চলমান সপ্তম বৈঠকে নামগুলো চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে বৈঠকের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এ বিষয়ে ব্রিফিং করবেন বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, এই ১০ জনের নাম মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হবে। আগামী বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন সার্চ কমিটির সদস্যরা।
এদিকে বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটের দিকে বৈঠকে বিরতি দিয়ে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন সার্চ কমিটির সদস্যরা। এ সময় প্রধান বিচারপতির পক্ষ থেকে সার্চ কমিটির সবাইকে সুপ্রিম কোর্টের প্রকাশনা সামগ্রী দেওয়া হয়। প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আবারও বৈঠকে বসে সার্চ কমিটি।
এর আগে বিকেল সাড়ে ৪টায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেজ লাউঞ্জে শেষ বৈঠকে বসে সার্চ কমিটি। সার্চ কমিটির প্রধান আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বৈঠকে সভাপতিত্ব করছেন।
গত রোববার সন্ধ্যায় ৬ষ্ঠ বৈঠক শেষে সার্চ কমিটির সভাপতি বিচারপতি ওবাদুল হাসান সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, আজকের (মঙ্গলবার) বৈঠকে ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করা হবে। তবে তাদের নাম প্রকাশ করা হবে না।
উল্লেখ্য, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে এবার আইন করেছে সরকার। এর আলোকে গঠন করা হয়েছে সার্চ কমিটি। এর আগের দুটি কমিশনও সার্চ কমিটি গঠন করেই করা হয়েছিল, যদিও তখন সুনির্দিষ্ট কোনো আইন ছিল না।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করে দেন রাষ্ট্রপতি। এই কমিটি নিজেদের মধ্যে বৈঠক ছাড়াও বিশিষ্টজন ও গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে পরামর্শ করে।
কমিটি নির্বাচন কমিশনে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের কাছ থেকে নাম চায়। এমনকি ব্যক্তিগত পর্যায়ে কেউ আগ্রহী হলে তারও নাম জমা দেয়ার সুযোগ ছিল।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নাম পাঠানোর সুযোগ ছিল। পরে দুই দিন বিশিষ্টজনদের সঙ্গে আলোচনায় উঠে আসা পরামর্শের ভিত্তিতে ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫টা পর্যন্ত আবার নাম পাঠানোর সুযোগ দেয়া হয়।
তবে যে কারণে এই বাড়তি সময় দেয়া হয়, সেটি সফল হয়নি। বিএনপি বর্ধিত সময়েও কোনো নাম প্রস্তাব করেনি।
জমা পড়া ৩২২টি নাম গত ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ করা হয়। তাদের নিয়ে চুলচেড়া বিশ্লেষণের মধ্যে শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ২০ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকা করা হয়।
এদিন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) সামসুল আরেফিন জানান, আরও দু-একটি বৈঠক করে ১০ জনের চূড়ান্ত তালিকা করে রাষ্ট্রপতির কাছে দেয়া হবে।
এর আগেও দুটি নির্বাচন কমিশন সার্চ কমিটি গঠন করে করা হয়েছিল। এই কমিটি রাষ্ট্রপতিকে নাম সুপারিশ করার পর ২০১২ সালে কাজী রকিবউদ্দিন আহমেদ ও ২০১৭ সালে কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়।
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে আপিল বিভাগ অসাংবিধানিক ঘোষণার পর সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে নির্বাচিত সরকারের অধীনে ভোটের ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনে আওয়ামী লীগ। তবে এর প্রতিবাদে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন ও প্রতিহতের ডাক দিয়ে আন্দোলনে নামে বিএনপি।
ব্যাপক প্রাণহানি ও সহিংস সেই ভোটের পর ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট অংশ নেয় দলীয় সরকারের অধীনেই। তবে সেই নির্বাচনে আগের রাতেই ভোট হয়ে গেছে- এমন একটি অভিযোগ তোলে তারা। এ কারণে দলীয় সরকারের অধীনে ভোটে যেতে চাইছে না তারা।
তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলছে, নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা একটি মীমাংসিত ইস্যু। শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন করতে এবার নির্বাচন কমিশন আইনও করা হয়েছে। আর এই আইনের আলোকেই গঠন করা হয়েছে সার্চ কমিটি।