নড়াইল নিউজ ২৪.কম বিনোদন ডেস্ক:
তিনিয়তই ভিন্ন ভিন্ন গল্প ও চরিত্রে হাজির হচ্ছেন চিত্রনায়ক সিয়াম আহমেদ। এরইমধ্যে চুক্তিবদ্ধ হলেন নতুন সিনেমায়, নাম ‘অন্তর্জাল’। এটি পরিচালনা করবেন ‘ঢাকা অ্যাটাক’ খ্যাত নির্মাতা দীপঙ্কর দীপন। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ২৪ জুন থেকে ছবিটির শুটিং শুরু হবে। এখানে সিয়ামের সঙ্গে জুটি বাঁধবেন জাতীয় চলচিচত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত নায়িকা সুনেরাহ বিনতে কামাল। এবারই প্রথম তারা একসঙ্গে কাজ করতে যাচ্ছেন।
ছবিটিতে যুক্ত হওয়া প্রসঙ্গে সিয়াম আহমেদ বলেন, কোনো একটা প্রজেক্টের সাথে যুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে পরিচালক একটা বিশাল বড় ফ্যাক্ট বলে মনে করি আমি। ‘অপারেশন সুন্দরবন’ সিনেমায় এই পরিচালকের সঙ্গে আমার কাজের অভিজ্ঞতা খুবই ভালো। ওই কাজটি করার সময়েই দীপঙ্কর দাদা নতুন আরেকটি সিনেমার কাজ গুছাচ্ছিলেন। এরপর আমার সাথে শেয়ার করেন। প্রথমে আমি ৩টি ভার্সনে পাণ্ডুলিপি পাই ‘অন্তর্জাল’ এর। প্রথমদিকে একটু কনফিউশনে ছিলাম। পাণ্ডুলিপিতে যেভাবে আছে সেই অনুযায়ী আমরা কীভাবে কাজটাকে নামাবো। তখন পরিচালক, টিম এবং টেকনিক্যাল টিমের সবার সাথে কথা বলি এবং তারা আমাকে আশ্বস্ত করেন। তারপরই কাজটির সঙ্গে যুক্ত হই। আর একই পরিচালক কিংবা টিমের সঙ্গে আবারো কাজ করতে পারাটা কিন্তু যেকোন শিল্পীর জন্য একটা প্রাপ্তিও বটে।
মূলত, আমাদের দেশের বাইরেও যে পৃথিবীতে অনেক কিছু ঘটছে বা যুদ্ধ হচ্ছে; সেগুলোই দেখানোর একটা প্রচেষ্টা ‘অন্তর্জাল’ এ। সামনের দিনগুলোতে যে যুদ্ধ হবে তা কিন্তু আর অস্ত্র দিয়ে নয়, সব হবে সাইবার ওয়ার্ল্ডের মাধ্যমে। যদি কখনো দেশের জন্য ডাক আসে তাহলে তরুণরা কতটুক প্রস্তুত, আদৌ প্রস্তুত কিনা; এমন কিছু থাকছে। আমার কাছে মনে হয়েছে এটা খুবই ইন্টারেস্টিং এবং সময়োপযোগী গল্প।
এ ছবিতে সিয়ামকে দেখা যাবে লুমিন চরিত্রে। চরিত্র সম্পর্কে এ নায়ক বলেন, এখানে আমার চরিত্রের নাম লুমিন, যে কিনা রাজশাহীতে থাকে। এখানে লুমিন কোনো সহজ চরিত্র নয়, খুবই কমপ্লেক্স। সে কম্পিউটার সাইন্স নিয়ে পড়াশোনা করলেও এ বিষয়ে সে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করতে ইচ্ছুক না। কারণ, সে কারও অধীনে চাকরী করতে রাজি নয়। সে একজন আইটি এক্সপার্ট হওয়ার কারণে চিন্তা করে তরুণদেরকে প্রোগ্রামিং শিখাবে এবং তাদেরকে কাজ দিবে এবং সেটাই করে। এরকম একটা ছেলেকে যখন দেশের কাজের জন্য ডাক দেওয়া হয় তখন সে আসে। এরপরই শুরু হয় নতুন গল্প। এটা আসলেই ইন্টারেস্টিং একটা চরিত্র।
রোমান্টিক নায়ক হিসেবে বড় পর্দায় অভিষেক। এখন পর্যন্ত মুক্তি পাওয়া চার সিনেমায় হাজির হয়েছেন চারটি ভিন্ন চরিত্রে। এছাড়াও মুক্তি প্রতীক্ষিত আরও ৭ সিনেমায়ও দেখা যাবে ভিন্ন চরিত্র ও জনরাতে। সম্প্রতি চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন আরও এক নতুন সিনেমায়, নাম ‘অন্তর্জাল’। এখানেও দেখা যাবে নতুনরূপে। ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে কাজ করে যাওয়াটা তো বেশ কঠিন একটা কাজ। এটা কীভাবে সামলাচ্ছেন? সিয়ামের উত্তর, প্রতিবন্ধকতা তো থাকেই। অনেক প্রতিবন্ধকতার মধ্যে সবচেয়ে বড় যেটা সেটা নিজের মধ্যেই ফেইস করছি। এটা আসলে খুব সহজ বিষয়ও না। একটা কাজ শুরু করার আগে বা করার সময় কিন্তু আমি বেসিক বিষয়টা নিয়ে ভাবি। চরিত্রের গভীরতাটা কতটুকু সেটা বোঝার চেষ্টা করি এবং সেই অনুযায়ী নিজের সেরাটা দেওয়ারই চেষ্টা করি। চরিত্রটার সঙ্গে আমি যাই কিনা বা আমি চরিত্রটাকে জাস্টিফাই করতে পারবো কিনা; এটা আমি আগে দেখি।
এই যে নিজেকে এত এত চরিত্রে ভাঙছেন, নিজেকে কি ভার্সেটাইল অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাচ্ছেন? এমন প্রশ্নে সিয়াম বলেন, এটা আসলে বলার মত এতোটাও সহজ না। আমার একটাই কথা, আমি আমার দর্শকদেরকে বোর করতে চাই না কখনো। আমাদের এখানে এরকম একটা বিষয় আছে যে, একটা বিষয় নিয়ে কাজ করার পর বারবার শুধু ওই বিষয়েই কাজ হতে থাকে বেশি। আমার শুরুটা রোমান্টিক নায়ক হিসেবে হয়েছে। আমি যদি শুধু রোমান্টিক চরিত্রই করে যাই তাহলে দর্শক হয়তো সেখানে বোর ফিল করতে পারেন। আমি সেটা চাইনি কখনো।
আমি সবসময় চেষ্টা করি আমার দর্শকদের মন্তব্যটা নেওয়ার, তারা কী চাচ্ছেন আমার কাছ থেকে! আমি বিভিন্ন মাধ্যমে দেখেছি তারা আমাকে ভিন্ন ভিন্ন জনরাতে কিংবা চরিত্রে দেখতে চায়। কোন কোন জায়গায় আমার ত্রুটি রয়েছে সেগুলোও দর্শকদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি বা পারছি। এটা কিন্তু আমার জন্য পজেটিভ দিক, একটা কনস্ট্রাকটিভ ক্রিটিসিজম। এতে করে আমি আমাকে শোধরাতে পারছি। আমি সত্যি বলতে নির্দিষ্ট কোনো জনরা নিয়ে ভাবিনি। শুরুর দিক থেকেই শুধু গল্প নিয়ে ভেবেছিলাম। গল্পের সাথে যে চরিত্রটা যায়, সেটাকে কীভাবে প্লে করা যায়; সেটাই ভেবেছি। কোন জনরা ভালো লাগবে কিংবা কোনটা লাগবে না; এই সিদ্ধান্তটা সম্পূর্ণ দর্শকদের। আমার সব জনরাতেই কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ লাগে।