নড়াইল নিউজ ২৪.কম ডেস্ক:
নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটির সঙ্গে আলোচনায় বিশিষ্টজনরা সবার কাছে আস্থাভাজন নির্বাচন কমিশন গঠনের ওপর জোর দিয়ে বলেছেন,এমন একটি কমিশন হতে হবে, যারা একটি ভালো নির্বাচনের জন্য পদক্ষেপ নিতে পারবেন। সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে শনিবার সার্চ কমিটির সঙ্গে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের দুটি বৈঠকে এ বিষয়টি উঠে এসেছে।
দ্বিতীয় বৈঠক শেষে সার্চ কমিটির সাচিবিক দায়িত্বে থাকা মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদেরকে এই কথা জানান।
বেলা ১১টা ২০ মিনিটে শুরু হয় বৈঠকের প্রথম সেশন। তাতে ১৪ বিশিষ্ট নাগরিক অংশ নেন। প্রথম সেশনে ২০ জন বিশিষ্ট নাগরিককে আমন্ত্রণ জানানো হয়। বৈঠক শেষ হয় ১২টা ৩৭ মিনিটে।
পরের সেশনে বৈঠক শুরু হয় দুপুর ১টা ৫ মিনিটে। ওই সেশনে ১১ জন নাগরিক অংশ নেন। বৈঠক শেষ হয় বিকেল ৩টার দিকে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আজ দুটি গ্রুপের সঙ্গে তিন ঘণ্টা আলোচনা হয়েছে। প্রথম গ্রুপে ১৪ জন। পরের গ্রুপে ১১ জনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। ওনারা বেশকিছু সাজেশন দিয়েছেন। সবার মূল বক্তব্য হলো এমন একটা ইলেকশন কমিশন নির্বাচন করা যাতে সবার আস্থাভাজন হয়। ভালো একটা নির্বাচন ব্যবস্থার জন্য তারা পদক্ষেপ নিতে পারেন। সেটাই মূল বক্তব্য ছিল।’
এখন সার্চ কমিটির পদক্ষেপ কী হবে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এগুলো সার্চ কমিটি সব নোট করেছে। আগামীকাল বিকেল ৪টার পর এ রকম আরেকটি মিটিং হবে। ওই মিটিংয়ের সার্চ কমিটি বসে তাদের সাজেশনগুলো নিয়ে কর্মপদ্ধতি ঠিক করবে।’
আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের। তাদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা গেল না।
তবে এই কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির সংলাপের পর সংবিধানে উল্লেখ থাকা নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। সেই আইনের আওতায় গঠন হয়েছে সার্চ কমিটি।
এর আগেও দুটি নির্বাচন কমিশন এই সার্চ কমিটির মাধ্যমে গঠন হয়েছিল। সেটিই এবার আইনি কাঠামোয় নিয়ে আসা হলো।
আগের দুটি সার্চ কমিটিকে বিএনপি নাম দিলেও এবার অবশ্য তারা রাষ্ট্রপতির সংলাপ এবং সার্চ কমিটির নাম চাওয়াকে গুরুত্ব দেয়নি।
বিএনপির অভিযোগ, রাষ্ট্রপতির গঠন করা সার্চ কমিটির মাধ্যমে প্রথমে রকিবউদ্দিন আহমেদ ও পরে কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন যে দুটি জাতীয় ও যেসব স্থানীয় নির্বাচন করেছে, সেগুলো সুষ্ঠু হয়নি। তাই তারা নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে ফিরে গেছে। তারা দাবি করছেন, সেই নির্দলীয় সরকারই নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবে।
রকিব কমিশনের করা ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচন বিএনপি ও তার সমমনারা বর্জন করেছিল। তবে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে এই জোট অংশ নিয়ে ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে ফল করেছে।
বিএনপি এবার সার্চ কমিটিকে নাম না দিলেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠনে তিন শতাধিক নাম জমা দিয়েছে। কত নাম জমা পড়েছে এ নিয়ে অবশ্য একটি বিভ্রান্তিও আছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানিয়েছেন তারা ৩২৯টি নাম পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এমনও হতে পারে, একজনের নাম চারবার-পাঁচবার এসেছে। সেগুলো সর্ট আউট করলেই আক্যচুয়ালি কতজন ভ্যালিড হয় সেটা বোঝা যাবে।’
পরে গুনে নাম পাওয়া যায় ৩০৯টি।
বিশিষ্টজনেরা জমা পড়া নাম প্রকাশ্যে আনতে বলেছেন। সে বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত হলো- এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, ‘এটা সাজেশন। সার্চ কমিটির সদস্যরা যখন বসবেন, ওনারা ওনাদের কার্যপদ্ধতি ঠিক করবেন।
‘দিস ইজ অ্যা সাজেশন ফ্রম বোথ গ্রুপ। তারা বলেছেন, ১০ জন না হলেও ৩০ জন কিংবা ৩৫ জনের নাম দেন; একটা শর্টলিস্ট করেন, যাতে বাইরে থেকে একটা অপিনিয়ন বা মতামত পাওয়া যায়।
‘জাফরুল্লাহ সাহেব বলেছেন, বিএনপি আসে নাই, তাদের আবার ডাকতে।’
সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হলো কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘এটা ওনার একটা সাজেশন। আমরা তো অবশ্যই তাদেরকে চিঠি দিয়েছি, অফিসিয়ালরা যোগাযোগ করেছে। কালকে মিটিংয়ের সময় বসে ওনারা সিদ্ধান্ত নেবেন।’
রোববার কাদের সঙ্গে বসা হবে- জানতে চাইল সচিব বলেন, ‘এরকমই আরেকটি গ্রুপ।’