নড়াইল নিউজ ২৪.কম আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গত কয়েক মাস ধরে মিয়ানমারের যে অস্থিরতা চলছে, তার জন্য দেশটির ক্ষমতাসীন সামরিক সরকার বিরোধীদের দায়ী করেছেন সরকারপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং। সোমবার এক টেলিভিশন ভাষণে এ বিষয়ে আসিয়ানের সহায়তাও চেয়েছেন তিনি।
সিভিল পোষাক পরিহিত জান্তা প্রধান এই দিন টেলিভিশন ভাষণে বলেন, ‘মিয়ানমারে বেশিরভাগ সংঘাত হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর উস্কানির কারণে। সবাই শুধু আমাদের দোষারোপ করে, কিন্তু তারা যে উস্কানি দেওয়াসহ সংঘাতের পরিবেশ সৃষ্টি করতে বিভিন্ন অপতৎপরতা চালাচ্ছে-সেসব কেউ দেখে না। আসিয়ানের উচিত- এ ব্যাপারটিতে মনোযোগ দেওয়া।’
গত ১ ফেব্রয়ারি সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইংয়ের নেতৃত্বে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী। ক্ষমতাচ্যুত ও বন্দি হন মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সুচিসহ তার দল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসির কয়েকজন আইনপ্রণেতা।
অভ্যুত্থানের পরপরই ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে মিয়ানমারের সামরিক সরকারবিরোধী জনগণ। দেশজুড়ে শুরু হয় বিক্ষোভ। ক্ষমতাসীন সামরিক সরকার প্রথমদিকে শান্তিপূর্ণ উপায়ে বিক্ষোভ দমনের পন্থা নিলেও এক পর্যায়ে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার শুরু করে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী এ পর্যন্ত মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ১১ শ’রও বেশি মানুষ।
ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পরপর এক ভাষণে মিন অং হ্লেইং বলেছিলেন- সামরিক বাহিনী স্থায়ীভাবে মিয়ানমারে আসন গাড়বে না, বরং দেশটিতে সত্যিকার গণতন্ত্র আনাই সামরিক বাহিনীর উদ্দেশ্য।
গত এপ্রিলে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর আঞ্চলিক সহযোগিতা সংগঠন আসিয়ানের প্রতিনিধিদের কাছে মিয়ানমারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার একটি ৫ স্তরের রোডম্যাপও দিয়েছিল মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী।
তবে ৬ মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও রোপম্যাপ অনুযায়ী কোনো উন্নতি না হওয়ায় হতাশা জানিয়েছে আসিয়ান, চলতি বছর ২৬ আগস্ট থেকে সংস্থাটির যে সম্মেলন শুরু হতে যাচ্ছে, তাতে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কাউকে যেন না পাঠানো হয় তা ইতোমধ্যে মিয়ানমারের সরকারকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে সংস্থাটির পক্ষ থেকে।
আসিয়ানের চিঠির জবাবেই সোমাবারের ভাষণ দিলেন মিন অং হ্লেইং। তার ভাষণ শেষ হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয় ৫ হাজার ৬০০ কয়েদিকে।