নড়াইল নিউজ ২৪.কম ডেস্ক:
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, সচিব রওনক মাহমুদের করোনায় আক্রান্ত মায়ের সেবায় হাসপাতালে ওই মন্ত্রণালয়ের ২১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে কোনো আদেশ ছিল না বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তারা সহানুভূতি থেকে দায়িত্ব পালন করেছেন। নিজ দপ্তরে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রীশ ম রেজাউল করিম।
তিনি বলেন, ‘আমি ঢাকার বাইরে ছিলাম। গত রাতে ঢাকায় ফিরেছি। পত্রিকার সূত্র ধরে জানতে পেরেছি যে, আমাদের মন্ত্রণালয়ের সচিব মহোদয়ের মা অসুস্থ। সেখানে ২৪ জন (হবে ২১ জন) কর্মকর্তা-কর্মচারী দেখভাল করছেন- এ জাতীয় একটা নিউজ।
‘একনেক মিটিংয়ে সচিব মহোদয়ের সঙ্গে দেখা হয়েছে, আমি তার কাছে জানতে চেয়েছি। তিনি বলেছেন এটা সঠিক না। কাউকে কোনো দাপ্তরিক দায়িত্ব দিয়ে সেখানে পাঠাননি।’
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, ‘সচিব নিজেই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিলেন। তারপর মা ৯৫ বছর বয়সে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাকে ঢাকায় নিয়ে আসছেন। মাকে নিয়ে ভর্তি করানো, এ সময় মন্ত্রণালয়ের বা অধিদপ্তরের অনেকে সহানুভূতি জানাতে হসপিটালে গিয়েছেন। তিনি কাউকে কোনো দায়িত্ব প্রদান করেননি।’
এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে কোনো চিঠি ইস্যু হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে দেখেছি, মন্ত্রণালয় থেকে এ ধরনের কোনো চিঠি ইস্যু করে সচিবের মাকে দেখভাল করার জন্য কোনো দায়িত্ব দেয়া হয়নি। মন্ত্রণালয় থেকে এ জাতীয় কোনো চিঠি ইস্যু করা হয়নি, কাউকে কোনোরূপ কোনো দায়িত্ব দেয়া হয়নি।
‘সচিব অসুস্থ থাকা অবস্থায় আমি নিজেও হাসপাতালে গিয়েছি সহানুভূতি জানাতে। আমার মনে হয়, আমি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে গেলেও গণমাধ্যমের অনেক বন্ধুও সহানুভূতি জানাতে বা খোঁজখবর নিতে যেতে পারেন। দেখতে যেতে পারেন, সহানুভূতি জানাতে যেতে পারেন।’
মন্ত্রী জানান, মন্ত্রণালয় থেকে যেসব চিঠি ইস্যু করা হয় তার একটি দাপ্তরিক স্মারক নম্বর থাকে, তারিখ থাকে। কোনো কর্মকর্তার স্বাক্ষর থাকে। এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা জারি করা হয়নি।
লিখিত না দিয়ে অন্য কোনোভাবে সচিবের মাকে সেবা করতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্দেশনা দেয়া হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি সচিবকে জিজ্ঞেস ধরেছি, তিনি বলেছেন যে এভাবে কাউকে কোনো দায়িত্ব দেয়া হয়নি। কাউকে অফিশিয়াল কাজের বাইরে গিয়ে তার মাকে দেখভাল করা বা সেখানে কোনো দায়িত্ব পালনের কথা বলেননি।’
গণমাধ্যমে তাহলে কী ভুল সংবাদ এসেছে? জবাবে শ ম রেজাউল বলেন, ‘গণমাধ্যমে নিউজের একটি জায়গায় দেখেছি, শুধু দায়িত্ব দেয়া না, রীতিমতো চিঠি ইস্যু করে, মন্ত্রণালয়ে চিঠি ইস্যু হলে স্মারক নম্বর থাকে, কর্মকর্তা কর্মচারী বা কনসার্ন অফিসারের স্বাক্ষর থাকে, আমি এটা চেক করে দেখেছি, মন্ত্রণালয় থেকে এ রকম কোনো চিঠি ইস্যু করা হয়নি।’
সচিবের মাকে এতজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর দেখতে যাওয়া অতিউৎসাহী কাজ কি না, এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘এর বাইরে তো আমার বলার কিছু নেই। মন্ত্রণালয় থেকে কোনো চিঠি ইস্যু করা হয়নি, এটা আমি নিশ্চিত হয়েছি। সচিবকে জিজ্ঞেস করেছি, তিনিও বলেছেন, না, আমি ভারবালিও কাউকে কোনো দায়িত্ব দিইনি। কাউকে কোনোভাবে আমার মাকে দেখভালের দায়িত্ব দিইনি। এখন আমার মা অসুস্থ, তাকে সহানুভূতি জানাতে হয়তো কেউ যেতে পারেন।
‘করোনায় হয়তো একসঙ্গে অনেকে না গিয়ে এভাবে (আলাদাভাবে) কেউ যেতে পারেন। গেছেন এটা উনি ওভাবে বলেননি, এভাবে কেউ যেতে পারেন, সেটা নিজ দায়দায়িত্বে যদি কেউ গিয়ে থাকে। লিখিতভাবে বা মৌখিকভাবে ওনার মাকে দেখার জন্য বা হসপিটালে যাওয়ার জন্য কিছু বলেননি। এটা উনি আমাকে জানিয়েছেন।’
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটা তালিকা প্রকাশ হয়েছে। সেটা নিয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে বা আমাদের কোনো দপ্তর বা অধিদপ্তর থেকে এ রকম কোনো তালিকা বের হয়নি। এর বাইরে আমার কী বলার আছে।’
বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে কি না, জানতে চাইলে শ ম রেজাউল বলেন, ‘কোনো দালিলিক ব্যাপার নাই। আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে বা আমাদের কোনো দপ্তর বা অধিদপ্তর থেকে এ রকম কোনো চিঠি ইস্যু হয়নি, এটা আমি নিশ্চিত হয়েছি। তারপর দালিলিক ব্যাপার কীভাবে আসে।’
আরও পড়ুন: সচিবের মা বলে কথা: সেবা করছেন উপ-সচিবসহ ২৪ কর্মকর্তা-কর্মচারী