নড়াইল নিউজ ২৪.কম ডেস্ক:
তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা ২০০২ সালে সাতক্ষীরায় তার গাড়িবহরে হামলার মামলার সাজাপ্রাপ্ত ৬ আসামির আপিল নাকচ করে দিয়েছে আদালত। সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শেখ মো. মফিজুর রহমান বুধবার দুপুরে এই রায় দেন।
আসামিরা হলেন আব্দুস সামাদ, গোলাম রসুল, জহুরুল ইসলাম, মো. সাহাবুদ্দিন, আব্দুর রকিব ও মনিরুল ইসলাম।
যশোর-সাতক্ষীরা সড়কে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা হয়। এ ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন আহত হন।
ওই দিনই কলারোয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেম উদ্দিন মামলা করেন। এ মামলায় তদন্ত শেষে হাবিবুল ইসলামসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়, শেখ হাসিনাকে হত্যা করতেই এই হামলা হয়েছে।
তবে আসামি রাকিবের আবেদনে ২০১৭ সালের ২৩ আগস্ট হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দেয়। তার ক্ষেত্রে মামলার কার্যক্রম কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়। পরে রাকিবকে জামিন দেয়া হয়।
রাকিবের আবেদনে বলা হয়েছিল, ২০০২ সালে তার বয়স ছিল ১০ বছর। সুতরাং তার বিচার হতে হলে শিশু আইনে হবে। বড়দের সঙ্গে দায়রা জজ আদালতে করা যাবে না। গত বছর ৮ অক্টোবর ওই রুল খারিজ করে রায় দেয় আদালত।
এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন রাকিবুর। এ আবেদনে আপিল বিভাগ তিন মাসের মধ্যে নিম্ন আদালতে বিচার করার নির্দেশ দেয়। সাতক্ষীরার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালত গত ৪ ফেব্রুয়ারি মামলায় সব আসামির নানা মেয়াদে সাজা ঘোষণা করে।
রায়ে হাবিবুল ইসলামকে কয়েকটি ধারায় ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাত্তারসহ অন্য আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়।
সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে ৩৭ জন কারাগারে; ১২জন পলাতক।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল ও জামিন আবেদন করা হয়। জামিন নাকচ হলে আসামিরা হাইকোর্টে গেলে জামিন পান।
ওই আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ লিভ টু আপিল করলে জামিন আদেশ বাতিল করে ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে চারটি আপিল নিষ্পত্তির জন্য সাতক্ষীরার জেলা ও দায়রা জজকে নির্দেশ দেয়া হয়।
গত ২৬ আগস্ট তিনটি আপিলের শুনানি শেষে রায়ের জন্য ৮ সেপ্টেম্বর দিন আদেশের তারিখ ঠিক করা হয়।
জজ কোর্টের পিপি আব্দুল লতিফ বলেন, ‘এ রায় বহাল থাকায় আগামীতে শুধুমাত্র একজন বিরোধীদলীয় নেতা নয়, একজন সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধেও কেউ এ ধরনের হামলার সাহস দেখাতে পারবে না।’
আপিলকারীদের পক্ষে আইনজীবী আব্দুল মজিদ বলেন, এ রায়ে তারা খুশি হতে পারেননি। আদেশের পূর্ণাঙ্গ কপি পাওয়ার পর পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।