শাবি শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙল জাফর ইকবালের আশ্বাসে শাবি শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙল জাফর ইকবালের আশ্বাসে – Narail news 24.com
বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
নড়াইলে প্রতারক গ্রেপ্তার  নড়াইলে যথাযোগ্য মর্যাদায় বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত নড়াইলে দিনব্যাপী ব্যস্ত সময় পার করলেন অতিঃ জিআইজি মোঃ হাসানুজ্জামান নড়াইলে হরিলীলামৃত বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মাঝে সম্মানী প্রদান লোহাগড়ায় বাসের ধাক্কায় প্রাণগেল এক জনের, আহত ১ লোহাগড়ায় ঘোষনা দিয়ে আওয়ামীলীগের রাজনীতি ছাড়লেন অধ্যক্ষ মোশারফ সাইবার নিরাপত্তা আইন অবশ্যই বাতিল হবে – আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ১০ বছর পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জয় পেল বাংলাদেশ নড়াইলে পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত কালিয়ায় বিএনপির অভ্যন্তরীন কোন্দলে আহত ৫, অস্ত্রসহ সেনাবাহিনীর হাতে আটক ৪

শাবি শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙল জাফর ইকবালের আশ্বাসে

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০২২

নড়াইল নিউজ ২৪.কম শিক্ষা ডেস্ক:

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা দাবি আদায়ে অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের দেয়া আশ্বাসে অবশেষে অনশন ভাঙলেন। উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে এক সপ্তাহ অনশন করার পর জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী অধ্যাপক ইয়াসমিন হকের উপস্থিতিতে তারা বুধবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে অনশন ভেঙেছেন। ক্যাম্পাসে থাকা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হাসপাতাল থেকে এসে অনশন ভেঙেছেন অসুস্থ হয়ে পড়া শিক্ষার্থীরাও।

ঢাকা থেকে মঙ্গলবার গভীর রাতে ক্যাম্পাসে যান জনপ্রিয় এই লেখক জাফর ইকবাল। এ সময় সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী সাবেক অধ্যাপক ইয়াসমিন হক।
আন্দোলনত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার সময় জাফর ইকবাল জানান, উচ্চ পর্যায়ে তার আলোচনা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে দাবি পূরণের প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন। এ কারণেই তিনি ক্যাম্পাসে ছুটে এসেছেন।

অনশন না ভাঙিয়ে ফিরে যাবেন না বলেও জানান জনপ্রিয় এই লেখক। তার অনুরোধে অবশেষে অনড় অবস্থান থেকে সরে আসেন শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা থেকে মঙ্গলবার রাতে রওনা দিয়ে ভোরের আগে আগে ক্যাম্পাসে পৌঁছান বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক দুই অধ্যাপক।
প্রিয় শিক্ষককে কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন শিক্ষার্থীরা। তার কাছে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগও করেন।

জাফর ইকবাল শিক্ষার্থীদের বলেন, ‘তোমরা কেন তোমাদের জীবন অপচয় করবা? তোমাদের বাঁচতে হবে। তোমরা ইতোমধ্যেই বিজয়ী হয়ে গেছ। সারা দেশের মানুষ তোমাদের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের ঘুম হারাম করে দিয়েছ জীবন অনেক মূল্যবান। তুচ্ছ বিষয়ে জীবন অপচয় করা যাবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজ উচ্চ পর্যায়ের এক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আমার বাসায় আলোচনা হয়েছে। তারা বাসায় এসেছিল। তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তোমরা যা চাইছ, যে দাবি তোমাদের সেটা পূরণ হবে। তোমাদের ওসিলায় বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ঠিক হবে।

‘তাদের সঙ্গে আলোচনার পর আমরা দেরি করিনি, সরাসরি এখানে চলে এসেছি। আমরা তোমাদের অনশন না ভাঙিয়ে যাব না।’

শিক্ষার্থীদের জাফর ইকবাল জানান, নিশ্চিত হয়েই এসেছেন যে তাদের দাবি পূরণ হবে।

এর আগে মঙ্গলবার রাতে অনশনে থাকা শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র শাহরিয়ার আবেদিন বলেন, ‘উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরা অনশন চালিয়ে যাব।’
আন্দোলনরতদের একটি দল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে সমাবেত হয়ে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার শপথ নেন। সে সময় ছাত্রদের একটি প্রতিনিধি দল অনশনকারীদের অনশন ভাঙার অনুরোধ জানান। এ দলের নেতৃত্বে ছিলেন মোহাইমিনুল বাশার রাজ।

অনশনকারীরা কর্মসূচিতে অটল থাকার ঘোষণা দেয়ার পর রাজ বলেন, ‘আমরা তাদের শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে অনশন ভাঙার অনুরোধ করেছিলাম। কারণ তাদের জীবনের চেয়ে মূল্যবান কিছু নেই। আমরা আমাদের কোনো সহযোদ্ধা হারাতে চাই না। তবে তাদেরকে জোর করার কিছু নেই। তাদের ওপর কিছু চাপিয়ে দেব না। আমরা তাদের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাই।

‘এর পরেও আমরা অনশন থেকে সরে এসে আন্দোলনের বিকল্প পথ খোঁজা যায় কি না এ ব্যাপারে তাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাব।’

আন্দোলনের শুরু যেভাবে

শাবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের শুরু ১৩ জানুয়ারি। রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ লিজার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী।

১৬ জানুয়ারি বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে উপাচার্যকে মুক্ত করে পুলিশ। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। পুলিশ সে সময় সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ছোড়ে। শিক্ষার্থীরাও ইট-পাটকেল ছোড়ে। এ ঘটনায় পুলিশ, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ অর্ধশত আহত হন।

সে রাতেই বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে তার পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন নামেন।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, উপাচার্যই পুলিশ ডেকে তাদের ওপর হামলার নির্দেশ দেন। এ কারণে তারা উপাচার্যের পদত্যাগ চান।

বাসভবনের সামনে অবস্থানের কারণে গত ১৭ জানুয়ারি থেকেই অবরুদ্ধ অবস্থায় আছেন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদ।

১৯ জানুয়ারি বেলা ৩টা থেকে উপাচার্যের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরণ অনশনে বসেন ২৪ শিক্ষার্থী।

তাদের মধ্যে একজনের বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় তিনি অনশন শুরুর পরদিনই বাড়ি চলে যান। ২৩ জানুয়ারি আরও চারজন ও ২৪ জানুয়ারি একজন শিক্ষার্থী অনশনে যোগ দেন।
এর মাঝে উপাচার্য ইস্যুতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ২২ জানুয়ারি গভীর রাতে ভার্চুয়ালি বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী। বৈঠকে উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না এলেও দাবিগুলো লিখিতভাবে জমা দেয়ার পরামর্শ দেন তিনি। সেই সঙ্গে অনশন ভাঙার অনুরোধও জানান শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

তবে বৈঠকের পর শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের মূল দাবি উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগ। এই দাবি না মানা পর্যন্ত তারা আন্দোলন থেকে সরবেন না, অনশনও চালিয়ে যাবেন।

২৩ জানুয়ারি রাতে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। ২৮ ঘণ্টা পর সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরায় চালু করেন তারা।

© এই নিউজ পোর্টালের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

ফেসবুকে শেয়ার করুন

More News Of This Category
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin
x