নড়াইল নিউজ ২৪.কম শিক্ষা ডেস্ক:
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ছাত্রীদের নিয়ে ‘আপত্তিকর মন্তব্যের’ প্রতিবাদ জানিয়েছে জাবি শিক্ষক সমিতি ও বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ। একই সঙ্গে ক্ষোভও জানিয়েছেন শিক্ষকরা। বৃহস্পতিবার সংগঠন দুটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিবাদ ও ক্ষোভ জানানো হয়।
শিক্ষক সমিতির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন, তা অত্যন্ত অবমাননাকর ও অসম্মানজনক।
শাবি উপাচার্যের আপত্তিকর মন্তব্যের বিরুদ্ধে আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং ক্ষোভ প্রকাশ করছি। আমরা আশা করি, তিনি প্রকাশ্যে তার ভুল স্বীকার করে অশোভন মন্তব্য প্রত্যাহার করবেন।’
বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সম্প্রতি শাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের তার সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে অবমাননাকর ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেন। বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ তার বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
‘ওই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে।’
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগের দাবিতে চলা আন্দোলনের মধ্যে একটি অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করতে শোনা যায় এক ব্যক্তিকে।
যারা এই অডিওটি ফাঁস করেছেন তাদের দাবি, এটি উপাচার্য ফরিদ উদ্দিনের। ছাত্রীদের রাতে বাইরে থাকা নিয়ে কটাক্ষ করছেন উপাচার্য।
বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে কথা হয় । তারা জানিয়েছেন, অডিওটি উপাচার্য ফরিদ উদ্দিনের, তবে এটি ২০১৯ সালের।
অডিওতে শোনা যায়, ‘যারা এই ধরনের দাবি তুলেছে, যে বিশ্ববিদ্যালয় সারারাত খোলা রাখতে হবে, এইটা একটা জঘন্য রকম দাবি। আমরা মুখ দেখাইতে পারতাম না। এখানে আমাদের ছাত্রনেতা বলছে যে, জাহাঙ্গীরনগরের মেয়েদের সহজে কেউ বউ হিসেবে চায় না। কারণ সারারাত এরা ঘোরাফেরা করে। বাট আমি চাই না যে আমাদের যারা এত ভালো ভালো স্টুডেন্ট, যারা এত সুন্দর, এত সুন্দর ডিপার্টমেন্টগুলো, বিখ্যাত সব শিক্ষক… তারা যাদের গ্র্যাজুয়েট করবে, এরকম একটা কালিমা লেপুক তাদের মধ্যে।
‘ওই জায়গাটা কেউ চায় না, কোনো গার্ডিয়ানও চান না কিন্তু। এখন আমরা যদি কোনো মেয়েকে বলি তোমার বাবা-মা কাউকে ফোন করব… তখন তোমরাই তো এতে বাধা দিবা… না না না এইটা হবে না, দেখ হয়রানি করতেছে। কিন্তু এইটা তো প্রত্যেকের নৈতিক দায়িত্ব। তোমাদেরও নৈতিক দায়িত্ব যে, এই মেয়ে কেন রাতের বেলা সোয়া দশটা পর্যন্ত স্যাররে সময় দিসে?’
ওই ক্লিপে আরও শোনা যায়, ‘আমি মাঝে মাঝে ঢাকা থেকে যখন আসি, রাতে ১২টা-১টা বেজে যায়। আমি দেখি যে আমাদের ওয়ান কিলোমিটার রাস্তা দিয়া ছেলে-মেয়ে হাত ধরাধরি করে কনসালটিং করতাছে। একটা অঘটন ঘটে গেলে দায়দায়িত্ব ভাইস চ্যান্সেলরকে নিতে হবে। যত দোষ, নন্দ ঘোষ। ভাইস চ্যান্সেলর দায়ী সে জন্য।’
এই ক্লিপের বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। আন্দোলনকারীরা তাকে বাসভবনে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন। ফোনে যোগাযোগের একাধিক চেষ্টা করা হলেও রিসিভ করেননি তিনি।