নড়াইল নিউজ ২৪.কম ডেস্ক:
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় সেদিন শপথ নিতে পারেননি বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান। প্রধান বিচারপতিকে জানিয়েছিলেন, সুস্থ হয়েই আপিল বিভাগের বিচারক হিসেবে শপথ নেবেন। সে জন্য কিছুটা মানসিকভাবেও প্রস্তুতি নিয়েছিলেন, কিন্তু করোনার কাছেই হার মানলেন তিনি। এক সঙ্গে নিয়োগ পাওয়া চার জনের তিন জন গত ৯ জানুয়ারি শপথ নিয়েছেন।
শুক্রবার সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নাজমুল আহাসান।
মৃত্যুকালে তিনি এক ছেলে, স্ত্রীসহ অনেক গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
বিচারপতি নাজমুল আহাসানের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে। তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। এ ছাড়া রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতিও শোক প্রকাশ করেছে।
তার মৃত্যুতে দেশের বিচার বিভাগে অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেলো বলেও মনে করছেন আইনজীবীরা।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত বলেন, ‘অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং আলোচিত বেশ কিছু মামলার রায় দিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে, বিনা বিচারে জেল খাটা জাহালমকে ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত রায়, বঙ্গবন্ধুর ছবি টানানো, চুয়াডাঙ্গায় চোখ হারানো ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত রায় এবং জয় বাংলাকে জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণা করাসহ আলোচিত বেশ কিছু মামলার রায় তিনি দিয়েছেন।
‘সবশেষ আপিল বিভাগে নিয়োগ পাওয়ার পরও তিনি সেখানে বিচারকের আসনে বসতে পারলেন না। এটা অনেক দুর্ভাগ্য আমাদের জন্য। তার মতো একজন দক্ষ, নিবেদিত প্রাণ, যিনি দেশের মানুষের জন্য এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচারিক কাজ করেছেন। তিনি সাহসিকতার সঙ্গে বিচারকের কাজ করেছেন। তার মৃত্যুতে বিচার বিভাগে অনেক ক্ষতি হয়ে গেল।’
বিচারপতি নাজমুল আহসানকে গত ৯ জানুয়ারি আপিল বিভাগের বিচারক হিসেবে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। শপথের পর থেকে তার সেই নিয়োগ কার্যকর হওয়ার কথা। তবে সে শপথ তিনি আর নিতে পারেননি।
বিচারক এফ আর এম নাজমুল আহাসান ২০১০ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান। পরে ২০১২ সালের ১৫ এপ্রিল স্থায়ী হন।
তিনি ১৯৮৬ সালে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। ১৯৯৪ সালে তিনি হাইকোর্টে এবং ২০০৯ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন।
তার জন্ম ১৯৫৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বরিশালে।