নড়াইল নিউজ ২৪.কম ডেস্ক:
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, দুর্গাপূজার সময় কুমিল্লায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতার মূল হোতা মোবাইল ফোন ব্যবহার করছেন না। এর ফলে তার অবস্থানও জানা যাচ্ছে না। সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
মূল হোতার নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, ‘হয়তো যারা তাকে পাঠিয়েছিল তারা তাকে লুকিয়ে রাখতে পারে। আমরা মূল হোতাকে চিহ্নিত করেছি।’
কুমিল্লা নগরীর নানুয়ার দিঘিরপাড়ের পূজামণ্ডপে গত ১৩ অক্টোবর ভোরে হনুমানের মূর্তির ওপর পবিত্র কোরআন শরিফ পাওয়ার পর ছড়িয়ে পড়ে সহিংসতা।
ওই মণ্ডপের পাশাপাশি আক্রান্ত হয় নগরীর আরও বেশ কিছু পূজামণ্ডপ। পরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে চাঁদপুর, নোয়াখালী, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায়।
দুর্গাপূজার সময় এবং পরে দেশের কয়েকটি জেলায় যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা দেখা গেছে সেগুলোকে ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ বলে উল্লেখ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘যা ঘটেছে বিচ্ছিন্ন ঘটনা। কারও মধ্যে কোনো আতঙ্ক নেই। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক আছে, নিয়ন্ত্রণে আছে।’
সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ এবং তদন্তসংশ্লিষ্টদের তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার জানা যায়, নানুয়ার দিঘির পাড়ের পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ রেখেছিলেন ইকবাল হোসেন নামের স্থানীয় এক যুবক। সহিংসতার আগের রাতে তিনি কোরআনটি নিয়েছিলেন মণ্ডপের পাশের শাহ আবদুল্লাহ গাজীপুরি (রা.)-এর মাজারের মসজিদের বারান্দা থেকে।
ইকবাল রাত ২টা ১০ মিনিটের দিকে কোরআন শরিফটি হাতে নিয়ে মণ্ডপের দিকে রওনা হন। এরপর মূল মণ্ডপের বাইরে পূজার থিম হিসেবে রাখা হনুমানের মূর্তির ওপর কোরআন রেখে ফিরে আসেন। এসব দৃশ্য ধরা পড়েছে ওই এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরায়।
নানুয়ার দিঘির পাশেই শাহ আবদুল্লাহ গাজীপুরি (রা.)-এর মাজারটির অবস্থান। মণ্ডপ থেকে হেঁটে যেতে সময় লাগে ২ থেকে ৩ মিনিট। দারোগাবাড়ী মাজার নামে কুমিল্লাবাসীর কাছে ব্যাপকভাবে পরিচিতি রয়েছে মাজারটির। এই মসজিদের বারান্দায় তিলাওয়াতের জন্য রাখা থাকে বেশ কয়েকটি কোরআন শরিফ। রাত-দিন যেকোনো সময় যে কেউ এখানে এসে তিলাওয়াত করতে পারেন।
ইকবালের বিষয়ে জানতে বুধবার রাতে দারোগাবাড়ী জামে মসজিদের পেশ ইমাম ইয়াছিন নূরীকে ফোন করা হলে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে সিসিটিভি ফুটেজ দেখিনি।’
মণ্ডপে সহিংসতার আগের রাতে তিনি কোরআন শরিফটি হাতে নিয়ে মণ্ডপের দিকে রওনা হন। এরপর মূল মণ্ডপের বাইরে পূজার থিম হিসেবে রাখা হনুমানের মূর্তির ওপর কোরআন রেখে ফিরে আসেন ইকবাল। এসব দৃশ্য ধরা পড়েছে ওই এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরায়।
প্রধান অভিযুক্ত ইকবালের সহযোগী হিসেবে অন্তত চারজন এরই মধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মনে করছে, ইকবাল গ্রেপ্তার হলেই এ ঘটনায় জড়িত সবাইকে চিহ্নিত করা সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন: