নড়াইল নিউজ ২৪.কম:
সুযোগ এর আগেও এসেছিল, তবে সে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ দল। এশিয়ার অন্য দুই পরাশক্তি ভারত আর পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতলেও নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এখনো অধরা বিজয় উল্লাস। এবার ঘরের মাঠে সিরিজ জয়ের আশা বাঁচিয়ে রেখেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। প্রথম ওয়ানডে ৩৩ রানে জয়ের পর আজ লঙ্কানদের ২৪৭ রানের লক্ষ্য দিয়েছে স্বাগতিকরা।
বাংলাদেশ- ২৪৬ অল আউট, ৪৮.১ ওভার (মুশফিক ১২৫, মাহমুদউল্লাহ ৪১; চামিরা ৩/৪৪, সান্দাকান ৩/৫৪)
এই ম্যাচে দীর্ঘ ২৩ মাস পর সেঞ্চুরির স্বাদ পেয়েছেন মুশফিকুর রহিম। রঙিন পোশাকে এর আগে সবশেষ সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন ২০১৯ বিশ্বকাপে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। লঙ্কানদের বিপক্ষে তার দ্বিতীয় ওয়নাডে শতকটি এলো আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৫ ইনিংস পর। এটি একদিনের ক্রিকেটে মুশফিকের অষ্টম শতক। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ১৫তম।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০০২ সাল থেকে চলমান সিরিজের আগ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৮টি ওয়ানডে সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ দল। যেখানে ৬টি সিরিজ লঙ্কানদের দখলে। বাকি দুটি সিরিজ হয়েছে ড্র। আজ (২৫ মে) মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে সফরকারীদের ২৪৭ রানের টার্গেট দিয়েছে বাংলাদেশ দল। এই রানের মধ্যে কুশল পেরেরার দলকে আটকে দিতে পারলে নতুন রেকর্ড যুক্ত হবে বাংলাদেশের দলের নামের পাশে।
সিরিজ জয়ের মিশনে গত ম্যাচের মতো এ ম্যাচেও টস ভাগ্য কথা বলে অধিনায়ক তামিম ইকবালের হয়ে। যথারীতি আগে ব্যাটিং নিতে ভুল করেননি তিনি। একাদশে দুই পরিবর্তন, তাসকিন আহমেদের পরিবর্তে অভিষেক ক্যাপ পরেন শরিফুল ইসলাম। আলোচিত মোহাম্মদ মিঠুনের জায়গায় মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। তবে আরো একবার সুযোগ পান লিটন দাস।
এই সুযোগটিও কাজে লাগাতে পারেননি লিটন। ভালো শুরু পেয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি, বেখেয়ালি ব্যাটিংয়ে বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার সান্দাকানকে উইকেট দিয়েছেন ২৫ রান করে। ৪২ বলে ইনিংসটিতে চার মারেন দুটি। লিটনের আগে ফিরেছেন আরও দুজন। ওপেনানার তামিম ইকবাল ১৩ রানে আউট হওয়ার পর একই পথ ধরেন সাকিব আল হাসান। রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি।
লিটনকে নিয়ে ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে এসে আগ্রাসী শুরু করেন তামিম। প্রথম ওভারের প্রথম তিন বলে টানা ৩টি চার মারেন তিনি। তবে পরের ওভারেই চামিরার বলে খেই হারিয়ে লেগ বিফোরের ফাদে পড়ে ফেরেন ৬ বলে ১৩ রান করে। ৩ বল পরে একই পথ ধরেন সাকিব। লিটন ২৫ ও মোসাদ্দেক ১০ রান করে আউট হলে ৭৪ রান তুলতেই ৪ উইকেট হারিয়ে বসে স্বাগতিকরা।
প্রথম ওয়ানডের মতো এবারও দলের হাল ধরেন মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আগের ম্যাচে দুজন ১০৯ রানের পার্টনারশিপ গড়ে দলকে বিপদমুক্ত করেছিলেন। আজ তাদের জুটি থেকে আসে ৮৭ রান। সান্দাকানকে সুইপ করতে গিয়ে উইকেটের পিছনে ধরা পড়েন রিয়াদ। এতে শেষ হয় তার ৪১ রানের ইনিংসটি। এর মাঝে অবশ্য ফিফটি তুলে নেন মুশফিক, সেটিকে পরে তিন অঙ্কে রূপ দেন।
মাহমুদউল্লাহএ আউটের পর আফিফ হোসেন ১০ ও মেহেদী হাসান মিরাজ কোন রান না করে আউট হলে বড় সংগ্রহের স্বপ্নে ধাক্কা লাগে বাংলাদেশ শিবিরে। পরে দুই দফার বৃষ্টিতে প্রায় এক ঘণ্টার মতো বন্ধ থাকে খেলা। বৃষ্টির আগে সাবলীল ব্যাটিংয়ে নিজের রানের চাকা সচল রাখেন মুশফিক। বৃষ্টির পর কাঙ্ক্ষিত মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি।
আগের ম্যাচে ৮৪ রানে আউট হয়েছিলেন। এবার আর ভুল করেননি। দীর্ঘ ২৩ মাস পর আসলো মুশফিকের এই সেঞ্চুরি। পরে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন ১২৫ রান করে। ১২৭ বলের ইনিংসটি সাজিয়েছেন ১০টি চারের মারে। শেষদিকে সাইফউদ্দিনের ১১ রানের কল্যাণে ইনিংসের ৪৯তম ওভারে অলআউট হওয়ার আগে ২৪৬ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। শ্রীলঙ্কার হয়ে চামিরা ও সান্দাকান ৩টি করে উইকেট নেন।