নড়াইল নিউজ ২৪.কম ডেস্ক:
দিনাজপুরের চিরিরবন্দরের এক নারী ও তার ছেলেকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে আটক রংপুর সিআইডির এএসপিসহ তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গ্রেপ্তার তিনজন হলেন, রংপুর সিআইডির এএসপি সারোয়ার কবির, এএসআই হাসিনুর রহমান ও কনস্টেবল আহসানুল হক। চিরিরবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত কুমার সরকার এই তথ্য করেছেন।
চিরিরবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত কুমার সরকার আরও জানান, বুধবার দুপুরে করা অপহরণের মামলায় তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাদের আদালতে তোলা হয়েছে। মামলাটি করেছেন চিরিরবন্দরের খলিলুর রহমান। অপহরণ হওয়া নারী তার ভাইয়ের স্ত্রী।
সদর উপজেলার বাশেরহাট থেকে মঙ্গলবার বিকেলে আটক করা হয় রংপুর সিআইডির এএসপি সারোয়ারসহ তিনজনকে। তাদের জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নেয়া হলে বুধবার সকালে বিষয়টি জানাজানি হয়।
খলিলুর বলেন, গত সোমবার সন্ধ্যায় তার ভাই লুৎফর রহমান স্থানীয় বাজারে যান। সে সময় বাড়িতে ছিলেন লুৎফরের স্ত্রী, ছেলে ও ছেলের বউ।
সিআইডির এএসপি সারোয়ার কবিরের নেতৃত্বে একটি দল রাত সাড়ে ৯টায় ওই বাড়িতে যায়। তারা লুৎফরকে আটক করতে এসেছেন বলে জানান। লুৎফরকে না পেয়ে আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। ঘরে থাকা টাকা ও স্বর্ণালঙ্কারও তারা লুট করেন। এরপর লুৎফরের স্ত্রী জহুরা বেগম ও ছেলে মো. জাহাঙ্গীরকে মারধর করে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে চলে যান।
লুৎফরের ভাগনে শামসুল আলম মানিক জানান, ঘটনার পর থেকে লুৎফরকেও কোথাও পাওয়া যায়নি। এরইমধ্যে তাদের মোবাইল নম্বরে দফায় দফায় ফোন করে বলা হয়, জহুরা ও জাহাঙ্গীরকে মুক্তির বিনিময়ে ১৫ লাখ টাকা দিতে হবে।
বিষয়টি চিরিরবন্দর থানায় জানান মানিক ও খলিলুর। এরপর থানা পুলিশের সঙ্গে পরামর্শ করে মুক্তিপণের টাকা নিতে অপহরণকারীদের মঙ্গলবার বিকেলে দিনাজপুর সদর উপজেলার বাশেরহাটে আসতে বলা হয়।
অপহরণকারীরা মঙ্গলবার বাশেরহাট আসলে চিরিরবন্দর থানা পুলিশ তাদের আটক করে। উদ্ধার করা হয় জহুরা ও তার ছেলে জাহাঙ্গীরকেও। বুধবার তাদের জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নেয়া হলে বিষয়টি জানাজানি হয়।
মানিক আরও জানান, এখনও লুৎফরের হদিস মেলেনি।
রংপুর সিআইডির ভারপ্রাপ্ত এসপি আতাউর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন, চিরিরবন্দরে আটক তিন জন রংপুর সিআইডির সদস্য।
তিনি জানান, সিআইডির এই সদস্যরা ২১ আগস্ট থেকে দশ দিনের ছুটিতে ছিলেন। তারা কোনো একটি অভিযোগের তদন্তে দিনাজপুর গিয়েছিলেন।
আতাউর বলেন, ‘সরকারি গাড়ি ব্যবহার না করে আমার অনুমতি ছাড়া ভাড়া করা একটি গাড়ি নিয়ে তারা অপারেশনে যায়। আটক হবার পর আমাকে জানানো হয়েছে। তারা যে আমাদের স্টাফ তা আমি জানিয়েছি। এর বাইরে কিছু জানি না।’