নড়াইল নিউজ ২৪.কম আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গত ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। গত বছর মহামারি শুরুর পর থেকে এ রোগে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থ হয়ে ওঠাদের সংখ্যা বিষয়ক হালনাগাদ সংখ্যা প্রকাশাকারী ওয়েবসাইট করোনাভাইরাস ওয়ার্ল্ডোমিটার সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ওয়েবসাইটটি জানাচ্ছে, শুক্রবার বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ১৬ হাজার ৬৬৭ জন এবং মারা গেছেন ১০ হাজার ২৩৪ জন। তার আগের দিন বৃহস্পতিবার নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৬৯ হাজার ৯৮১ জন এবং এ রোগে মৃতের সংখ্যা ছিল ১০ হাজার ২৭৭ জন।
হিসেব করে দেখা গেছে, বুধবারের তুলনায় বৃহস্পতিবার পৃথিবীজুড়ে করোনায় নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে ৫৩ হাজার ৩১৪ জন; আর এই সময়সীমায় মৃতের সংখ্যা কমেছে ৪৩ জন।
দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর হিসেবে গত কয়েক মাস ধরে ১ম ও ২য় শীর্ষস্থানে আছে দুই দেশ ভারত ও ব্রাজিল। শুক্রবারও তার ব্যতিক্রম হয় নি। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনা আক্রান্ত কিছুটা কমলেও বেড়েছে মৃতের সংখ্যা।
শুক্রবার ভারতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ২১ হাজার ৪৭৬ জন এবং এ রোগে মারা গেছেন ৩ হাজার ৩৮২ জন। এর আগের দিন বৃহস্পতিবার ভারতে নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৩১ হাজার ৩৭১ জন এবং সেদিন দেশটিতে করোনায় মারা গিয়েছিলেন ২ হাজার ৭০৬ জন।
এদিকে, একদিনের ব্যবধানে নাটকীয়ভাবে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে ব্রাজিলে। শুক্রবার দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩৮ হাজার ৪৮২ জন এবং মারা গেছেন ১ হাজার ১৮৪ জন। আগের দিন বৃহস্পতিবার দেশটিতে নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৮৩ হাজার ৩৯১ জন এবং সেদিন সেখানে মারা গিয়েছিলেন ২ হাজার ৭৮ জন।
এই তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা দেশ আর্জেন্টিনায়ও করোনায় আক্রান্ত ও মৃতুহার কম লক্ষ্য করা গেছে। শুক্রবার দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩০ হাজার ৯৫০ জন এবং এদিন এ রোগে মৃত্যু হয়েছে ৫৩৮ জনের। আগের দিন বৃহস্পতিবার দেশটিতে করোনায় নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৩২ হাজার ২৯১ জন এবং এই সময়সীমায় সেখানে মৃত্যু হয়েছে ৫৫৩ জন করোনা রোগীর।
দৈনিক আক্রান্ত ও মৃতের তালিকায় চতুর্থ শীর্ষস্থানে অবস্থান করা কলম্বিয়ায় অবশ্য কিছুটা বেড়েছে করোনায় নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। শুক্রবার দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩০ হাজার নতুন রোগী এবং মারা গেছেন ৫৩৭ জন। বৃহস্পতিবার দেশটিতে নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ২৮ হাজার ৬২৪ এবং মৃতের সংখ্যা ছিল ৫৪৫ জন।
যুক্তরাষ্ট্রে শুক্রবার করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা দু’টোই কমেছে। এদিন দেশটিতে করোনায় নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ১৬ হাজার ৮৪৯ এবং মৃতের সংখ্যা ছিল ৫১৭ জন। আগের দিন বৃহস্পতিবার দেশটিতে এদিন করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ১৭ হাজার ৭৬৮ জন এবং মারা গিয়েছিলেন ৫৭০ জন।
এছাড়া বৃহস্পতিবার বিশ্বের আরও যেসব দেশে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর উচ্চহার দেখা গেছে সেগুলো হলো – ইরান (আক্রান্ত ৯ হাজার ২০৯, মৃত্যু ১৫৫), মালয়েশিয়া (৭ হাজার ৭৪৮, মৃত্যু ৮৩), রাশিয়া (আক্রান্ত ৮ হাজার ৯৪৭, মৃত্যু ৩৭৭), ফ্রান্স (আক্রান্ত ৬ হাজার ৯৫৩, মৃত্যু ৮৪), ফিলিপাইন (আক্রান্ত ৭ হাজার ৭৫০, মৃত্যু ১৮১), পেরু (আক্রান্ত ৭ হাজার ৪৭৩, মৃত্যু ৪৩৩), তুরস্ক (আক্রান্ত ৬ হাজার ১৬৯, মৃত্যু ৯৪) ও মেক্সিকো (আক্রান্ত ২ হাজার ৮৯৪, মৃত্যু ২১৬)।
মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১৭ কোটি ৩৩ লাখ ১১ হাজার ৬১৯ জন এবং এ রোগে মারা গেছেন মোট ৩৭ লাখ ২৭ হাজার ১৭৪ জন। এই মুহূর্তে পৃথিবীতে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৩৫ লাখ ৭২ হাজার ৯৩১ জন। তাদের মধ্যে এই রোগের মৃদু উপসর্গ নিয়ে চলছেন ১ কোটি ৩৫ লাখ ৩১ হাজার ৪৪৮ জন এবং গুরুতর অবস্থায় আছেন ৮৮ লাখ ২০২ জন।
অবশ্য এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর সেরে ওঠা মানুষের তালিকাও কম নয়। ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য বলছে, মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৫ কোটি ৬০ লাখ ৫৩ হাজার ৫৭ জন।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। মারাত্মক সংক্রামক এই ভাইরাসটির সংক্রমণ রোধে শনাক্তের অল্প কিছুদিনের মধ্যেই, ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি পৃথিবীজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও); কিন্তু তাতে কাজ না হওয়ায় অবশেষে গত ১১ মার্চ ডব্লিউএইচও করোনায়কে বৈশ্বিক মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে।