বিভিশিখাময় ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা: মামলা আপিল যেকোনো সময় শুনানি বিভিশিখাময় ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা: মামলা আপিল যেকোনো সময় শুনানি – Narail news 24.com
বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৫৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
নড়াইলে যথাযোগ্য মর্যাদায় বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত নড়াইলে দিনব্যাপী ব্যস্ত সময় পার করলেন অতিঃ জিআইজি মোঃ হাসানুজ্জামান নড়াইলে হরিলীলামৃত বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মাঝে সম্মানী প্রদান লোহাগড়ায় বাসের ধাক্কায় প্রাণগেল এক জনের, আহত ১ লোহাগড়ায় ঘোষনা দিয়ে আওয়ামীলীগের রাজনীতি ছাড়লেন অধ্যক্ষ মোশারফ সাইবার নিরাপত্তা আইন অবশ্যই বাতিল হবে – আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ১০ বছর পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জয় পেল বাংলাদেশ নড়াইলে পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত কালিয়ায় বিএনপির অভ্যন্তরীন কোন্দলে আহত ৫, অস্ত্রসহ সেনাবাহিনীর হাতে আটক ৪ নড়াইলে সার্ভে ডিপ্লোমাদের ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে ৩ দিনের কর্মবিরতি পালিত

বিভিশিখাময় ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা: মামলা আপিল যেকোনো সময় শুনানি

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ২১ আগস্ট, ২০২১

নড়াইল নিউজ ২৪.কম ডেস্ক:

বিভিশিখাময় ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানি এক বছর আগে পেপারবুক প্রস্তুত হলেও করোনার কারণে থমকে ছিল। গত সপ্তাহ থেকে হাইকোর্টের নিয়মিত বেঞ্চে বিচারকাজ শুরু হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ বলেছে, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা আপিল শুনানির জন্য ইতোমধ্যে পলাতক আসামিদের রাষ্ট্র থেকে আইনজীবী নিয়োগ প্রক্রিয়াও শেষ হয়েছে। এ বছরেই আলোচিত এ মামলার আপিল ও ডেথ রেফারেন্স শেষ করার আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘ইতোমধ্যে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় হাইকোর্ট থেকে পেপারবুক রেডি হয়ে গেছে। দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের জন্য আদালত থেকে রাষ্ট্রের আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। মামলা আপিল শুনানির জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। যেহেতু নিয়মিত আদালত চালু হয়ে গেছে আমরা সামনের সপ্তাহে আদালতে উপস্থাপন করব অতিদ্রুত শুনানির জন্য। এ বছরেই আমরা শুনানি শেষ করব বলে আশা করছি।’

আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় নিম্ন আদালতে রায়ের পর দ্রুততম সময়ে পেপারবুক প্রস্তুত হয়েছে। আমি যতদূর জানি মামলাটি এখন আপিল শুনানির জন্য প্রস্তুত। কিন্তু বিগত কয়েক মাস ধরে লকডাউনের কারণে আদালতে আপিল শুনানি হয়নি। এ মামলা নিয়ে আমাদের ভয়ভীতির কিছু নাই। খুব পরিষ্কার করে যদি বলি, লুৎফজ্জামান বাবর, তারেক রহমান, আবদুস সালাম পিন্টুসহ রাজনৈতিক নেতাদের সম্পূর্ণ  রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করার জন্যই তাদের এ মামলায় চার্জশিটভুক্ত করা হয়েছে। আমরা এ কথাগুলো আপিল শুনানিতে তুলে ধরবো।’

২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ও হত্যা মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে ফাঁসি ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিএনপি নেতা কাজী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন কায়কোবাদসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত।

নিম্ন আদালতে মৃত্যু-দণ্ডপ্রাপ্ত ১৯ আসামি:
বিচারিক আদালতের রায়ে মৃত্যু-দণ্ডপ্রাপ্ত ১৯ আসামি হলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম, হানিফ পরিবহনের মালিক মো. হানিফ, জঙ্গি নেতা মাওলানা তাজউদ্দীন, মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, মাওলানা শেখ ফরিদ, মাওলানা আবু সাইদ, মুফতি মঈনউদ্দিন শেখ ওরফে আবু জান্দাল, হাফেজ আবু তাহের, মো. ইউসুফ ভাট ওরফে মাজেদ বাট, আবদুল মালেক, মফিজুর রহমান ওরফে মহিবুল্লাহ, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, মো. জাহাঙ্গীর আলম, হোসাইন আহমেদ তামিম, রফিকুল ইসলাম ওরফে সবুজ ও মো. উজ্জ্বল ওরফে রতন।

নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ১৯ আসামি:
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, শাহাদাৎ উল্লাহ ওরফে জুয়েল, মাওলানা আবদুর রউফ ওরফের আবু ওমর আবু হোমাইরা ওরফে পীরসাহেব, মাওলানা সাব্বির আহমদ ওরফে আবদুল হান্নান সাব্বির, আরিফ হাসান ওরফে সুজন ওরফে আবদুর রাজ্জাক, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, আবু বকর ওরফে সেলিম হাওলাদার, মো. আরিফুল ইসলাম ওরফে আরিফ, মহিবুল মোত্তাকিন ওরফে মুত্তাকিন (পলাতক), আনিসুল মুরছালিন ওরফে মুরছালিন (পলাতক), মো. খলিল (পলাতক), জাহাঙ্গীর আলম বদর ওরফে ওস্তাদ জাহাঙ্গীর (পলাতক), মো. ইকবাল (পলাতক), লিটন ওরফে মাওলানা লিটন (পলাতক), তারেক রহমান ওরফে তারেক জিয়া (পলাতক), হারিছ চৌধুরী (পলাতক), কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ (পলাতক), মুফতি শফিকুর রহমান (পলাতক), মুফতি আবদুল হাই (পলাতক) এবং রাতুল আহম্মেদ বাবু ওরফে বাবু ওরফে রাতুল বাবু (পলাতক)।

একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া দুই মামলার রায়সহ প্রায় ৩৭ হাজার ৩৮৫ পাতার নথি ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এসে পৌঁছায়। পরে আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানির জন্য মামলার পেপারবুক তৈরির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। সেই আদেশের ধারাবাহিকতায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে  সাড়ে ১০ হাজার পৃষ্ঠার পেপারবুক প্রস্তুত সম্পন্ন হয়।

আসামিদের মধ্যে ২২ জন খালাস চেয়ে আপিল করেছেন। অপরদিকে ১২ জন আসামির জেল আপিল দায়ের হয়েছে।

ফিরে দেখা ২১ আগস্ট:
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। ওই হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলা-বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের কয়েকশ নেতা-কর্মী। তাদের অনেকে আজও শরীরে গ্রেনেডের স্প্লিন্টার নিয়ে দুঃসহ জীবনযাপন করছেন।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলেই গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার শুরু হয়। ৬১ জনের সাক্ষ্য নেওয়ার পর ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারে এসে এর অধিকতর তদন্ত করে। এরপর বিএনপির নেতা তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, হারিছ চৌধুরী, জামায়াতের নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদসহ ৩০ জনকে নতুন করে আসামি করে ২০১১ সালের ৩ জুলাই সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি।

এরপর দুই অভিযোগপত্রের মোট ৫২ আসামির মধ্যে তারেক রহমানসহ ১৮ জনকে পলাতক দেখিয়ে বিচার শুরু হয়। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কয়েকজন সাবেক-সেনা কর্মকর্তা আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন, যারা জোট সরকারের আমলে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদফতরে (ডিজিএফআই) ও র‍্যাবের গোয়েন্দা শাখায় কর্মরত ছিলেন।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সিআইডি এ মামলার অধিকতর তদন্ত করে এবং ২০১১ সালের ৩ জুলাই সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয়। তাতে আরও ৩০ জনকে আসামি করা হয়। তারা হলেন তারেক রহমান, লুৎফুজ্জামান বাবর, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, সাবেক সাংসদ শাহ মোহাম্মদ কায়কোবাদ, খালেদা জিয়ার ভাগ্নে সাইফুল ইসলাম (ডিউক), এনএসআইয়ের সাবেক দুই মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আবদুর রহিম ও মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার, ডিজিএফআইয়ের মেজর জেনারেল (অব.) এ টি এম আমিন ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল (বরখাস্ত) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দার, পুলিশের সাবেক তিন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) আশরাফুল হুদা, শহুদুল হক ও খোদা বকশ চৌধুরী, সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি খান সাইদ হাসান ও ওবায়দুর রহমান, জোট সরকারের আমলে মামলার তিন তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান ও এএসপি আবদুর রশিদ, হানিফ পরিবহনের মালিক মো. হানিফ এবং হুজি-বির ১০ জন নেতা।

আসামিদের মধ্যে পুলিশের সাবেক ছয় কর্মকর্তা, খালেদা জিয়ার ভাগ্নে সাইফুল ইসলাম ও সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর আরিফুর রহমান ছিলেন। আদালত রায়ের দিন ধার্য করলে ওই দিন  তাদের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠান আদালত। বাবর, পিন্টুসহ ২৩ জন আসামি কারাগারে রয়েছেন। পলাতক রয়েছেন ১৮ জন। জামায়াতের নেতা মুজাহিদ, মুফতি হান্নানসহ তিন আসামির অন্য মামলার রায়ে ফাঁসি কার্যকর হয়েছে।

© এই নিউজ পোর্টালের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

ফেসবুকে শেয়ার করুন

More News Of This Category
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin
x