নড়াইল নিউজ ২৪.কম ডেস্ক:
প্যারাডাইস ও পানামা পেপার্সে যেসব বাংলাদেশির নাম বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে এসেছে, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে তার অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। সিআইডি ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে আগামী ৬ মার্চ এ প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। পাশাপাশি সুইস ব্যাংকসহ বিদেশি ব্যাংকে যারা অর্থ রেখেছেন, তাদের একটি তালিকা দাখিল করতে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
রোববার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম খান ও সুবীর নন্দী দাস। দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
সুবীর নন্দী দাস বলেন, ‘প্যারাডাইস পেপার ও পানামা পেপার্সে নাম আসা ৬৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আগামী ৬ মার্চ দুদক ও সিআইডিকে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে সুইস ব্যাংকে টাকা জমাকারীদেরও তালিকা দাখিল করতে বিএফআইইউকে বলা হয়েছে।’
আগামী সোমবার এ মামলার রুল শুনানির জন্য দিন ঠিক করে দিয়েছে আদালত।
প্যারাডাইস ও পানামা পেপার্সে বাংলাদেশি ৬৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকা গত বুধবার আদালতে দাখিল করে বিএফআইইউ। প্রতিবেদনে দেখা যায়, তালিকায় দেশের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদের নাম রয়েছে।
এর মধ্যে প্যারাডাইস পেপার্সে যাদের নাম এসেছে, তারা হলেন বিএনপি নেতা আব্দুল আউয়াল মিন্টু, তার স্ত্রী ফাতেমা নাসরিন আউয়াল, তিন ছেলে তাবিথ আউয়াল, তাফসির আউয়াল, তাজওয়ার আউয়াল, মেঘনাঘাট পাওয়ার লিমিটেডের ফয়সাল চৌধুরীর নাম আছে। আরও আছে ওয়াই ফরিদা মোগল, শহিদ উল্লাহ, সামির আহমেদের নাম।
সেভেন সিজ অ্যাসেটস লিমিটেড, সোয়েন ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড, ব্রামার অ্যান্ড পার্টনার্স অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড, ইউনোকল বাংলাদেশ লিমিটেড, ইউনোকল বাংলাদেশ এক্সপ্লোরেশন লিমিটেড, ইউনোকল শাহবাজপুর পাওয়ার লিমিটেড, ইউনোকল শাহবাজপুর পাইপলাইন লিমিটেড, এনএফএম এনার্জি (সিঙ্গাপুর) পিটিই লিমিটেড, ইউনোকল বাংলাদেশ ব্লক সেভেন লিমিটেড, ইউনোকল শাহবাজপুর লিমিটেড, ইউনোকল বাংলাদেশ ব্লক ফাইভ লিমিটেড, ইউনোকল বাংলাদেশ ব্লক টেন লিমিটেড, বারলিংটন রিসোর্সেস বাংলাদেশ লিমিটেড, ইউনোকল বাংলাদেশ ব্লকস থারটিন অ্যান্ড ফরটিন লিমিটেড, ইউনোকল বাংলাদেশ ব্লক টুয়েলভ লিমিটেড, ফ্রন্টিয়ার বাংলাদেশ (বারমুডা) লিমিটেড, টেরা বাংলাদেশ ফান্ড লিমিটেডের নামও রয়েছে এতে।
আর পানামা পেপার্সে নাম আসা ৪৩ জনের মধ্যে আছেন আওয়ামী লীগ নেতা কাজী জাফর উল্লাহ, তার স্ত্রী বেগম নিলুফার কাজী, ছেলে কাজী রায়হান জাফর।
ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপ বিল্ডারের সোহাইল হোসাইন (হাসান), স্পার্ক লিমিটেডের চেয়ারম্যান ইফতেখারুল আলম, বাংলা ট্র্যাক লিমিটেডের আমিনুল হক, নাজিম আসাদুল হক ও তারিক ইকরামুল হক, আব্দুল মোনেম লিমিটেডের এ এস এম মহিউদ্দিন মোনেম ও আসমা মোনেমের নামও আছে এই তালিকায়।
আরও আছেন বিএপিআইয়ের সাবেক সভাপতি এ এম এম খান, মমিন টি-এর আজমত মঈন, পাট ব্যবসায়ী দিলীপ কুমার মোদী, অনন্ত গ্রুপের শরীফ জহির, মার্কেন্টাইল করপোরেশনের আজীজ খান, আঞ্জুমান আজীজ খান, আয়েশা আজীজ খান, জাফের উমায়ের খান ও ফয়সাল করিম খান; সি পার্লের চেয়ারম্যান সৈয়দ সিরাজুল হক, ইউনাইটেড গ্রুপ অফ কোম্পানিজের হাসান মাহমুদ রাজা, খন্দকার মঈনুল আহসান শামীম, আহমেদ ইসমাইল হোসেন, আখতার মাহমুদ, মাসকট গ্রুপের চেয়ারম্যান এফ এফ জোবায়দুল হক, সেতু করপোরেশনের মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ও উম্মে রাব্বানা; স্কয়ার গ্রুপের প্রয়াত স্যামসন এইচ চৌধুরী। এ ছাড়া বিটিএল, ক্যাপ্টেন এম এ এফ এম জোবায়দুল হক, সালমা হক, খাজা শাহাদাৎ উল্লাহ, মীর্জা ইয়াহিয়া, সৈয়দা সামিয়া মীর্জা, আমিনুল হক, তারেক একরামুল হক, জাহিদুল ইসলাম, মো. শহীদ, মোহাম্মদ ফয়সাল করিম, নজরুল ইসলাম, সৈয়দ সিরাজুল হক ও জুলফিকার হায়দার।
বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের তালিকা দাখিল করতে গত বছরের ৬ ডিসেম্বর নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।