বিজ্ঞানীদের গবেষণায় ফিরছে বিলুপ্ত প্রায় দেশীয় মাছ বিজ্ঞানীদের গবেষণায় ফিরছে বিলুপ্ত প্রায় দেশীয় মাছ – Narail news 24.com
শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৫:৩০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
পিছিয়ে গেল আইএমএফের চতুর্থ কিস্তির ঋণ নড়াইলে তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষে ২০ দিনব্যাপী মেলার উদ্বোধন নড়াইলে বালক-বালিকাদের সাইক্লিং প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত নড়াইল কালেক্টরেট স্কুলের দুইদিন ব্যাপী বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন নড়াইল পৌর বিএনপি নব-নির্বাচিত নেতৃবৃন্দকে গণসংবর্ধনা নড়াইল প্রেসক্লাবের নব গঠিত কমিটির সাথে জামায়াত নেতাদের মতবিনিময় নড়াইলে ভ্যাট ও ট্যাক্স বৃদ্ধির প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্টিত নড়াইল প্রেসক্লাবের নবগঠিত কমিটির সাথে মতবিনিময় সভা করলেন জেলা প্রশাসক  সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নতুন বাংলাদেশের চার্টার হয়ে থাকবে – প্রধান উপদেষ্টা পরিবেশ বান্ধব নড়াইল জেলা বিনির্মানে প্রচারনা ও জনসচেতনামুলক র‌্যালী অনুষ্টিত

বিজ্ঞানীদের গবেষণায় ফিরছে বিলুপ্ত প্রায় দেশীয় মাছ

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২১
ফাইল ছবি

নড়াইল নিউজ ২৪.কম ডেস্ক:

দেশীয় অনেক মাছ বিলুপ্ত হয়েগেছে আরও রয়েছে বিলুপ্তির পথে। এমন সময় আশার আলো দেখাচ্ছে বিজ্ঞানীরা। দেশীয় মাছ ফিরিয়ে আনতে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) বিজ্ঞানীরা বিলুপ্ত প্রায় সকল দেশীয় মাছ ফিরিয়ে আনতে ক্লান্তিহীন গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে ইতোমধ্যে ৩১ প্রজাতির দেশীয় মাছের পোনা উৎপাদনে সফল হয়েছেন তারা। এর মধ্যে ১৯ প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় মাছ সারা দেশে চাষ হচ্ছে। এসব দেশীয় মাছ উৎপাদনে বিপ্লব ঘটাচ্ছেন চাষিরা।

মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা যায়, দেশে স্বাদু পানির ২৬০ প্রজাতির মাছের মধ্যে ১৪৩ প্রজাতির ছোট মাছ রয়েছে। এর মধ্যে বিলুপ্তপ্রায় মাছের সংখ্যা ৬৪টি। ইতোমধ্যে ৩১টি দেশীয় মাছের পোনা কৃত্রিম প্রজননে উৎপাদন করেছেন বিজ্ঞানীরা। বাকিগুলোও উৎপাদন করতে গবেষণা চলছে। উৎপাদিত দেশীয় মাছের পোনা চাষিদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে।

২০০৮-২০০৯ সালে চাষের মাধ্যমে দেশি মাছের উৎপাদন ছিল ৬৭ হাজার টন। ২০১৯-২০২০ সাল নাগাদ তা প্রায় চার গুণ বেড়ে ২ লাখ ৫০ হাজার টন হয়েছে। ফলে বাজারে এখন দেশি মাছের ছড়াছড়ি।

ফাইল ছবি

গবেষণায় উৎপাদিত মাছগুলোর মধ্যে রয়েছে পাবদা, গুলশা, ট্যাংরা, শিং, মাগুর, গুজি আইড়, চিতল, ফলি, মহাশোল, বৈরালী, রাজপুঁটি, মেনি, বালাচাটা, গুতুম, কুঁচিয়া, ভাগনা, খলিশা, বাটা, দেশি সরপুঁটি, কালবাউশ, কই, গজার, গনিয়া, পিয়ালি, ঢেলা, রানি, বাতাসি ও কাকিলা। এ ছাড়া বিলুপ্তির আশঙ্কায় থাকা বাকি মাছগুলো নিয়েও গবেষণা চলছে।

বিজ্ঞানীরা জানান, বাংলাদেশে মিঠাপানির হ্যাচারি রয়েছে ৯৩০টি। বিলুপ্তপ্রায় মাছের পোনা সারা দেশে ব্যাপক হারে উৎপাদনের জন্য ইনস্টিটিউটে হ্যাচারি মালিক ও চাষিদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। উৎপাদিত পোনাগুলোও স্বল্পমূল্যে সরবরাহ করা হচ্ছে।

ইনস্টিটিউটের প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশীয় প্রজাতির মাছের পোনা উৎপাদন করছে হ্যাচারিমালিকরা। পরে ব্যবহার করা হচ্ছে চাষাবাদে। কর্মসংস্থান হয়েছে লক্ষাধিক লোকের। দেশীয় মাছের জিন সংরক্ষণ, প্রজননের কৌশল উদ্ভাবন এবং চাষাবাদ পদ্ধতির কারণে সফলতা এসেছে।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. জুলফিকার আলী বলেন, দেশীয় প্রজাতির মাছগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, লৌহ ও আয়োডিনের মতো প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থ রয়েছে। এগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে এবং রক্তশূন্যতা, গলগণ্ড, অন্ধত্ব প্রভৃতি রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।

গবেষণায় উৎপাদিত মাছের পোনা মাঠপর্যায়ে সম্প্রসারিত হওয়ায় বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির মাছের প্রাপ্যতা সাম্প্রতিককালে বেড়েছে এবং মাছের দাম সাধারণ ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে এসেছে।

ফাইল ছবি

ময়মনসিংহে ইনস্টিটিউটের স্বাদুপানি কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শাহা আলী বলেন, ‘পাবদা মাছ দুই বছর আগেও ১ হাজার ৩০০ টাকা কেজি দরে বাজারে বিক্রি হয়েছে। কিন্তু এখন ৫০০ টাকার কমেই পাওয়া যায়। বাজারে এখন শিং মাছের দাম ৪০০ টাকা, ট্যাংরা মাছের দামও ৪০০ টাকা।

‘এসব মাছ ছাড়াও সাম্প্রতিককালে বাজারে বিপন্ন প্রজাতির মেনি, চিতল, ফলি, কই ইত্যাদি মাছের প্রাপ্যতা যেমন বেড়েছে, দামও নেমে এসেছে সহনশীল পর্যায়ে। এ ছাড়া গবেষণায় উৎপাদিত মাছের পোনা চাষে হ্যাচারিমালিকসহ চাষিরাও লাভবান হচ্ছেন।’

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অভ্যন্তরীণ উন্মুক্ত জলাশয় সংকুচিত হয়ে যাওয়ায় দেশীয় মাছের প্রজনন ও বিচরণক্ষেত্র ইতোমধ্যে অনেক বিনষ্ট হয়েছে। প্রাকৃতিক জলাধার যেমন হাওড়, খাল-বিল ও নদনদীতে এসব মাছের প্রাপ্যতা হ্রাস পেয়েছে। ফলে দেশীয় মাছ সংরক্ষণের জন্য ময়মনসিংহে ইনস্টিটিউটের সদরদপ্তরে লাইভ জিন ব্যাংক স্থাপন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সারা দেশে যত ছোট মাছ আছে, সেগুলো সংগ্রহ করে এই লাইভ জিন ব্যাংকে রাখা হচ্ছে। যদি প্রকৃতি থেকে কোনো মাছ হারিয়ে যায়, তাহলে সংরক্ষণে থাকা মাছটিকে গবেষণা করে আবারও ওই মাছের পোনা উৎপাদন করা হবে। ফলে বিলুপ্ত হওয়া মাছ সারা দেশে চাষের মাধ্যমে ছড়িয়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, চাষের আওতায় আসা বিলুপ্তপ্রায় ১৯ প্রজাতির দেশীয় মাছ ছাড়া উৎপাদিত আরও ১২টি মাছের পোনা নিয়ে গবেষণা চলছে। দ্রুত সেই মাছগুলোকেও চাষের আওতায় আনা হবে।

মহাপরিচালক বলেন, একটি মাছ নিয়ে ১ থেকে ৫ বছর পর্যন্ত সময় ধরে গবেষণা করতে হয়। মোটা বাইন নামে একটি পিচ্ছিল দেশীয় মাছ নিয়ে প্রায় তিন বছর যাবৎ গবেষণা চলছে। হরমোন প্রয়োগ করে পোনা উৎপাদনে সফলতা পাওয়া যাচ্ছে না। তবে গবেষণা চলছে। আগামী বছরের জুন-জুলাইয়ের মধ্যে বিলুপ্তির আশঙ্কায় থাকা দেশীয় আট থেকে ১০ প্রজাতির মাছের পোনা উৎপাদনে সফলতার সম্ভাবনা রয়েছে।

বর্তমানে ময়মনসিংহ স্বাদুপানি কেন্দ্র ছাড়াও বগুড়ার সান্তাহার, নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর ও যশোর উপকেন্দ্রে বিলুপ্তপ্রায় মাছ সংরক্ষণে গবেষণা চলছে। দেশীয় মাছ সংরক্ষণ গবেষণায় বিশেষ অবদানের জন্যে ২০২০ সালে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট একুশে পদক অর্জন করে।

© এই নিউজ পোর্টালের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

ফেসবুকে শেয়ার করুন

More News Of This Category
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin
x