নড়াইল নিউজ ২৪.কম ডেস্ক:
চার শিশুকে প্রিজন ভ্যানে করে কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো বরিশালের বাকেরগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের বিচারিক ক্ষমতা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার এ নির্দেশ দেয়। সেই সঙ্গে এ ঘটনায় জড়িত থাকা বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ ৮ পুলিশের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পুলিশ প্রধানকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
পাশাপাশি সমাজসেবা অফিসারের বিরুদ্ধেও বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে এবং শিশু আইনে পুলিশের ভূমিকা কী থাকবে সেটি প্রজ্ঞাপন দিয়ে জানাতে বলেছে আদালত।
আদালতে চার শিশুরপক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম, তার সঙ্গে ছিলেন জামিউল হক ফয়সাল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নাওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।
চার শিশুকে যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর আদেশদানকারী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এনায়েত উল্লাহ এবং ওই শিশুদের গ্রেপ্তার করে থানায় মীমাংসা না করে প্রিজন ভ্যানে করে আদালতে নিয়ে যাওয়ায় বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে গত বছরের ১১ অক্টোবর ভৎসনা করেছিল হাইকোর্ট।
ওই দিন চার শিশুকেও খাস কামরায় নিয়ে তাদের বক্তব্য শোনে আদালত। পরে চার শিশুর বিরুদ্ধে বরিশালের বাকেরগঞ্জ থানায় করা মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে আদেশ দেয় হাইকোর্ট। পাশাপাশি চার শিশুকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিতে বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেয়া হয়।
ছয় বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে চার শিশুকে আসামি করে গত বছরের ৬ অক্টোবর মামলা করা হয়। এ মামলায় ওই দিনই চার শিশুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে ৭ অক্টোবর বরিশালের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এনায়েত উল্লাহ আদেশে চার শিশুকে যশোর পুলেরহাট শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠায়।
বিষয়টি নিয়ে বেসরকারি একটি টেলিভিশনে সংবাদ প্রচারিত হয়। এই সংবাদ বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চের নজরে আসে ৮ অক্টোবর রাতে। এরপর রাতেই বিচারপতিদ্বয় নিজ নিজ বাসায় অবস্থান করে ভার্চুয়াল আদালত বসিয়ে আদেশ দেয়।
আদেশে ওই রাতেই চার শিশুর জামিনের বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে বরিশালের শিশু আদালতের বিচারকের প্রতি নির্দেশ দেয়। এরপর দীর্ঘ শুনানি শেষে রোববার রায় প্রদান করা হয়।