নড়াইল নিউজ ২৪.কম ডেস্ক:
জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে গণমুখী ও বাস্তবসম্মত বলে দাবি করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘প্রস্তাবিত এই বাজেট অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সংকটকালে পরিমিত, বাস্তবসম্মত, গণমুখী ও সাহসী। আমরা এই বাজেটকে স্বাগত জানাই।’
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে শনিবার প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম, ডাক্তার মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, সুজিত রায় নন্দী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট সায়েম খান সহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এবারের বাজেটের মূল লক্ষ্য চলমান অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ও সংকট দূর এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করে দেশের অর্থনীতিকে ধীরে ধীরে উচ্চ গতিশীল অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে বাংলাদেশকে ফিরিয়ে নেয়া।’
বাজেট নিয়ে সমালোচনা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সিপিডি, টিআইবি, সুজন কী বলল এসব নিয়ে আমাদের কোন মাথাব্যথা নেই। ওরা সবাই বিএনপির সুরে সুর মিলিয়ে কথা বলছে। বাস্তবের সঙ্গে কোনো মিল নেই।
‘হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে বিএনপির দণ্ডিত পলাতক নেতা তারেক রহমান লন্ডনে বসে আরাম-আয়েশে দিনযাপন করছে। হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারের হিসাব মির্জা ফখরুল সাহেবকে দিতে হবে।’
তিনি বলেন, প্রায় আট লাখ কোটি টাকার বাজেট দিলেও আওয়ামী লীগের অর্থমন্ত্রীদের ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে ছুটোছুটি করার কোনো নজির নেই। বিএনপি আজকে বড় বড় কথা বলে; অর্থ পাচার, দুর্নীতি এবং দেশকে গিলে খাওয়ার কথা বলে।
‘তাদের আমলে সবশেষ বাজেট ছিল ৬৮ হাজার কোটি টাকার। এরপরও বাজেটের আগে সাইফুর রহমানকে বিশ্ব অর্থনীতির বিভিন্ন ফোরামে প্যারিসের কনসোর্টিয়ামের বৈঠকে বাজেটের আগে দৌড়াতে হয়েছিল ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে। আমাদের কোনো অর্থমন্ত্রী ভিক্ষা করতে যাননি।’
বরাবরের মতো আগামী বাজেটেও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্নের জবাব দেন সেতুমন্ত্রী। বলেন, ‘দেশকে অর্থপাচার থেকে রক্ষা করা, যারা অজ্ঞাতসারে দেশের টাকা পাচার করে, ১৫ শতাংশ কর দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ অর্থনীতির মূলধারায় আনার ব্যবস্থা করেছি। এর ফলে ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থপ্রবাহ বাড়বে বলে আমরা মনে করছি।’
খেলাপি ঋণ নিয়ে অর্থনীতিবিদদের সমালোচনা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘অর্থনীতিবিরাও এখন পোলারাইজড হয়ে গেছে। বিএনপি-মার্কা অর্থনীতিবিদ। এখন তাদের মনের যে অসন্তোষ, ক্ষমতায় না থাকার যে বেদনা, ক্ষমতায় এলে যে সুযোগ-সুবিধা পেতেন সে স্বপ্ন তাদের ভেস্তে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনেক অর্থনীতিবিদ রয়েছেন। তারা বলেছেন যে পরিমিত, সাহসী বাজেট হয়েছে। চ্যালেঞ্জ আছে, সেটা হচ্ছে বাস্তবায়ন। সেই চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করার জন্য সরকার ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে।
‘আমরা অনেক চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করেছি। এই চ্যালেঞ্জও অতিক্রম করতে পারব। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, ডলার সংকট নিয়ন্ত্রণ, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, পারিবারিক কার্ডের মাধ্যমে এই সংকট মোকাবেলার স্কিম আছে। সোশ্যাল সেফটি নেটওয়ার্ক প্রশস্ত করা হয়েছে।’
আওয়ামী লীগের অনেকেই দুর্নীতি করে অনেক অর্থ কামিয়েছেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমাদের দলের দুর্নীতিবাজদের তালিকা দেন। আমরা দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদককে বলব তদন্ত করতে।’