বরিশালে মেয়রকে লক্ষ্য করে গুলি:৭ ঘণ্টা পর বাস চলাচল করছে, বন্ধ লঞ্চ বরিশালে মেয়রকে লক্ষ্য করে গুলি:৭ ঘণ্টা পর বাস চলাচল করছে, বন্ধ লঞ্চ – Narail news 24.com
বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০২:২৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
নড়াইলে যথাযোগ্য মর্যাদায় বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত নড়াইলে দিনব্যাপী ব্যস্ত সময় পার করলেন অতিঃ জিআইজি মোঃ হাসানুজ্জামান নড়াইলে হরিলীলামৃত বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মাঝে সম্মানী প্রদান লোহাগড়ায় বাসের ধাক্কায় প্রাণগেল এক জনের, আহত ১ লোহাগড়ায় ঘোষনা দিয়ে আওয়ামীলীগের রাজনীতি ছাড়লেন অধ্যক্ষ মোশারফ সাইবার নিরাপত্তা আইন অবশ্যই বাতিল হবে – আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ১০ বছর পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জয় পেল বাংলাদেশ নড়াইলে পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত কালিয়ায় বিএনপির অভ্যন্তরীন কোন্দলে আহত ৫, অস্ত্রসহ সেনাবাহিনীর হাতে আটক ৪ নড়াইলে সার্ভে ডিপ্লোমাদের ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে ৩ দিনের কর্মবিরতি পালিত

বরিশালে মেয়রকে লক্ষ্য করে গুলি:৭ ঘণ্টা পর বাস চলাচল করছে, বন্ধ লঞ্চ

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১৯ আগস্ট, ২০২১

নড়াইল নিউজ ২৪.কম ডেস্ক:

বরিশালের সিটি মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বন্ধ থাকার ৭ ঘন্টারও বেশি সময় পর ব‌রিশা‌লে যানবহন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। ব‌রিশাল জেলা বাস মা‌লিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাস‌রেক বাবলু বিষয়টি  নি‌শ্চিত ক‌রে‌ছেন।তবে এখনও বন্ধ আছে লঞ্চ চলাচল।

শোক দিবসের ব্যানার অপসারণের জেরে সিটি করপোরেশন ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পুলিশের সংঘর্ষের পর বুধবার রাত ১১টা থেকেই বন্ধ ছিল ঢাকা-ব‌রিশাল মহাসড়কে যান চলাচল।

এরপর সিটি মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ওপর গুলি চালানোর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সব রুটের বাস ও লঞ্চ বন্ধের ঘোষণা আসে।

এতে হঠাৎ করে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।

বরিশাল মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ‍ইউনিয়নের সভাপতি পরিমল চন্দ্র দাস বাস বন্ধের বিষয়টি সকালে জানিয়েছেন।

তিনি জানান, বুধবার রাতে ‍উপজেলা পরিষদ এলাকায় অবৈধ ব্যানার ‍উচ্ছেদে গিয়ে উপজেলা সিটি করপোরেশনের কর্মীরা। ‍এ সময় ‍ইউএনওর ‍উপস্থিতিতে সেই কর্মীদের ওপর গুলি চালান ‍আনসার সদস্যরা। সিটি মেয়র সেখানে গেলে তার ওপরও গুলি ছোড়া হয়।

তিনি বলেন, ‍‘আমাদের বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ‍ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ‍আহম্মেদ শাহারিয়ার বাবুসহ ছাত্রলীগ ও ‍আওয়ামী লীগের বহু নেতা-কর্মী ‍আহত হন। তাই ‍ইউএনওর বিচারের দাবিতে বরিশাল থেকে বাস, লঞ্চ ও মাহিন্দ্রা চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।’

বরিশাল নদীবন্দরে থাকা লঞ্চের শ্রমিকরা জানান, স্থানীয়ভাবে লঞ্চ না চালাতে তাদের নিষেধ করা হয়েছে। এ কারণে সকাল ৮টার পর থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে কে বা কারা লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে, ‍এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য তারা দিতে রাজি হননি। ‍

বরিশাল বন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বুধবার রাতে সদর ‍উপজেলার ‍ইউএনও এবং বরিশাল সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের ভেতর ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জের ধরে লঞ্চ মালিকরা সকাল থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রেখেছে। তবে লঞ্চ চলাচল শুরু করার ব্যাপারে মালিকদের সঙ্গে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ ‍আলোচনা চালাচ্ছে।’ ‍

যেভাবে সংঘর্ষ শুরু:

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ের সামনে বুধবার রাতে শোক দিব‌সের ব্যানার খুলতে যান ব‌রিশাল সি‌টি করপোরেশনের কর্মচারীরা। এ সময় ব্যানার খোলার কারণ জানা নিয়ে ইউএনও মু‌নিবুর রহমানের সঙ্গে সি‌টির প্রশাস‌নিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাসের কথা-কাটাকা‌টি হয়।

প্রশাস‌নিক কর্মকর্তার সঙ্গে থাকা আওয়ামী লী‌গের নেতা-কর্মীরা ওই সময় ইউএনওর সঙ্গে বিবাদে জ‌ড়িয়ে পড়েন। পরে সেখানে উপ‌স্থিত আনসার‌ সদস্যদের সঙ্গে হাতাহা‌তি শুরু হলে উপ‌স্থিত আওয়ামী লী‌গ, যুবলীগ ও ছাত্রলী‌গের নেতা-কর্মীরা ইউএনওর বাসায় হামলার চেষ্টা চালান। এ সময় আনসার সদস্যরা গু‌লি ছুড়লে প্রশাস‌নিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাসসহ চারজন আহত হন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, যুবলীগ নেতা শাহ‌রিয়ার বাবু, হারুন অর র‌শিদ ও তানভীরকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ব‌রিশাল শের-ই-বাংলা মে‌ডি‌ক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভ‌র্তি করা হয়েছে।

সংঘর্ষের পর ইউএনও কার্যালয়ের সামনে পু‌লিশ অবস্থান নিলে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা ফের ইউএনওর বাসভবনে হামলার চেষ্টা করেন।

এ সময় পু‌লিশ ও সরকারদলীয় নেতা-কর্মী‌দের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে আহত হন বেশ কয়েকজন।

ইউএনও মু‌নিবুর রহমান বলেন, ‘১০ থেকে ১৫টি মোটরসাইকেলে করে জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠ‌নিক সম্পাদক রা‌জিব আমার কম্পাউন্ডে ঢুকে ব্যানার ছিঁড়তে থাকে। তাদের বারণ করা হলে তারা আমাকে ঘিরে ধরে। এ সময় আমার সেফ‌টির জন্য আনসার সদস্যরা যেটা প্রয়োজন সেটা করেছে।’

তি‌নি আরও বলেন, ‘ঘরে আমার বৃদ্ধ বাবা-মা করোনা আক্রান্ত। এর মধ্যে এমন ঘটনায় আ‌মি আতঙ্কিত।’

ব‌রিশালের জেলা প্রশাসক (ডিসি) জসীম উ‌দ্দিন হায়দার বলেন, ‘ব্যানার অপসারণ করতে হলে সেটা আমাদের আগে জানাতে পারত। এখন অনাকা‌ঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হ‌বে।’

বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাজ্জাদ সেরনিয়াবাত বলেন, ‘ইউএনও মু‌নিবুর রহমান নিজে বন্দুক নিয়ে গু‌লি ছুড়েছে। সি‌টি করপোরেশনের লোকজন ব্যানার খুলতে আসলে এ আচরণ করেন তিনি। এতে করপোরেশনের কর্মকর্তা স্বপনসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। পরে মেয়র মহোদয় এখানে এসে নিজের প‌রিচয় দিলেও তার ওপর গু‌লি ছোড়ে ইউএনও।’

ব‌রিশাল মেট্রোপলিটন পু‌লি‌শের অ‌তি‌রিক্ত ক‌মিশনার এনামুল হক বলেন, ‘‌কিছু স্থানীয় লোকজন সদর উপজেলা প‌রিষদ প্রাঙ্গণে রাতে ব্যানার খুলতে আসে। ইউএনও সাহেব তাদের সকালে আসতে বলেন। কিন্তু তা না করে ইউএনও সাহেবের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে তারা।

‘পরে তার বাসায় হামলার চেষ্টা করলে আনসার সদস্যরা গু‌লি ছোড়ে। প‌রি‌স্থি‌তি নিয়ন্ত্রণে আনতে পু‌লিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলে তাদের সঙ্গে একটু ঝামেলা হয়েছে। কয়েকজন পু‌লিশ সদস্য আহত হয়েছেন।’

ঘটনার সময় কোনো বক্তব্য না দিলেও রাত ৩টার দিকে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছেন সিটি মেয়র সাদিক।

তিনি বলেন, ‘বরিশালে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে প্রশাসনের লোকজন, তাতে আমার পদত্যাগ ছাড়া উপায় নেই। আমাকে তারা কাজ করতে দিচ্ছে না। কার ইশারায় এমনটা করছে তারা? আমার কাজে মনোনিবেশ করতে পারছি না উনাদের কারণে। উনারা সব প্যাকড হয়ে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে নেমেছেন।’

মেয়র জানান, ব্যানার সরিয়ে নিতে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন। যেগুলো সরানো হয়নি, সেগুলো অপসারণে রাতে কাজ শুরু করেন কর্মচারীরা। উপজেলা পরিষদ চত্বরে তাদের বাধা দেয়া হয়।

তিনি বলেন, ‘নগর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা আমাদের রেগুলার কাজ। সেই অনুযায়ী আমার করপোরেশনের কর্মীরা রাতে উপজেলার পরিষদ চত্বরে বিভিন্ন ব্যানার অপসারণে যায়। এ সময় ইউএনও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাদের লোকজনের ওপর গুলি চালায়। এতে আমার প্রশাসনিক কর্মকর্তাও আহত হয়। গুলিবিদ্ধ হয় আরও অনেকে।

‘খবর শোনার পর আমি আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের ঘটনাস্থলে পাঠাই বিষয়টি সম্পর্কে জানার জন্য। তবে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদেরও গালিগালাজ করে ইউএনও। পরবর্তীতে আমি ঘটনাস্থলে গেলে আমার ওপরও গুলি চালানো হয়। আমার শরীরেও গুলি লাগে। এর পরই আমার লোকজন আমাকে ঘিরে রাখে। আমার মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহামুদ বাবুকেও আটকে রাখে।’

মেয়র বলেন, ‘আসলে আমি কষ্ট পেয়ে লজ্জায় সেখান থেকে বাসায় চলে আসি। প্যানেল মেয়রদের রেখে আসি, যাতে সেখানে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়। পরে শুনি পুলিশ গিয়ে আমার নেতা-কর্মীদের এলোপাতাড়ি মারধর করেছে।

‘শত শত লোক আহত হয়েছে। এমন হলে আমি কীভাবে কী করব? আমাকে এমনভাবে কেন টার্গেট করা হচ্ছে? আমাকে কেন কাজ করতে দেয়া হচ্ছে না? এগুলো আমার প্রশ্ন নয়, নগরবাসীর প্রশ্ন।’ এ ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান মেয়র সাদিক।

আরও পড়ুন: প্রশাসনের লোকজন আমাকে কাজ করতে দিচ্ছে না – বরিশালের মেয়র

বরিশাল মেয়রকে লক্ষ্য করে গুলি: সকাল থেকে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ

© এই নিউজ পোর্টালের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

ফেসবুকে শেয়ার করুন

More News Of This Category
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin
x