নড়াইল নিউজ ২৪.কম ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী প্রজন্মের জন্য টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে অংশীজনদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে বিশ্বের প্রধান অর্থনীতির দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন । এ লক্ষ্যে ছয় দফা সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব রেখেছেন সরকার প্রধান শেখ হাসিনা।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ডাকা ‘মেজর ইকোনমিজ ফোরাম অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লাইমেট’ শিরোনামে শীর্ষ সম্মেলনে শনিবার দেয়া ভাষণে এ প্রস্তাব রাখেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর রাখা প্রস্তাবগুলো হল:-
১. প্রধান কার্বন নির্গমনকারী দেশগুলোকে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত রাখার লক্ষ্যে তাদের কার্বন নির্গমন হ্রাস করার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে।
২. জলবায়ু তহবিলের জন্য উন্নত দেশগুলোর বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলারের অঙ্গীকার পূরণ করতে হবে এবং অভিযোজন ও প্রশমনের মধ্যে ৫০:৫০ বিতরণ করতে হবে।
৩. উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রযুক্তি হস্তান্তরের পাশাপাশি সবচেয়ে কার্যকর জ্বালানি সমাধান নিয়ে উন্নত দেশগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে।
৪. নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে উত্তরণের ক্ষেত্রে জাতি-রাষ্ট্রগুলোর সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন অগ্রাধিকারগুলোর হিসাব নেয়া এবং তাদের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে লোকসান ও ক্ষতির বিষয়গুলো বিবেচনা করা উচিত।
৫. সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, নদীভাঙন, বন্যা ও খরার কারণে বাস্তুচ্যুত মানুষদের পুনর্বাসনের দায়িত্ব সব দেশের ভাগ করে নেয়া দরকার।
৬. পরবর্তী প্রজন্মের জন্য টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে প্রধান অর্থনীতির দেশগুলোকে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে বিশ্বব্যাপী সব অংশীজনের সঙ্গে কাজ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী নভেম্বরে গ্লাসগোতে অনুষ্ঠেয় কপ২৬ সম্মেলনে দৃঢ় ও তাৎপর্যপূর্ণ ফলাফল কামনা করেন এবং এ লক্ষ্যে সেখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার জন্য বিশ্বের প্রধান অর্থনীতির দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, নদীভাঙন, বন্যা ও খরার প্রভাব ছাড়াও ১১ লাখ রোহিঙ্গা জোরপূর্বক মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হওয়ার কারণে বাংলাদেশ গুরুতর জলবায়ু প্রভাবের সম্মুখীন হচ্ছে।’
জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন ও প্রশমন প্রচেষ্টায় তার সরকার অগ্রণী হিসেবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ সম্প্রতি একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী ও হালনাগাদ করা এনডিসি জমা দিয়েছে।’
বাংলাদেশ বিশ্বের সর্বাধিক বিস্তৃত অভ্যন্তরীণ সৌরশক্তি কর্মসূচি গ্রহণ করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে, যা জলবায়ু ঝুঁকি থেকে জলবায়ু সহিষ্ণুতা এবং তা থেকে জলবায়ু সমৃদ্ধি পর্যন্ত একটি যাত্রা।”
জলবায়ু ঝুঁকি ফোরাম (সিভিএফ) এবং ভি-২০-এর সভাপতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের মূল লক্ষ্য হচ্ছে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর স্বার্থ তুলে ধরা।’
তিনি আরও বলেন, ঢাকায় গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপ্টেশনের দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের মাধ্যমেও বাংলাদেশ সেরা অনুশীলন ভাগ করে নেয়।