নড়াইল নিউজ ২৪.কম ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাস মহামারির ক্ষতি কোনো দেশের পক্ষে এককভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব নয় জানিয়ে সমতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বিশ্ব গড়তে সাহসী এবং দৃঢ় পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ‘ডেলিভারিং দ্য ইউএন কমন এজেন্ডা: অ্যাকশন টু অ্যাচিভ ইকুয়েলিটি অ্যান্ড ইনক্লুশন’ শীর্ষক এক উচ্চ পর্যায়ের আলোচনায় ধারণ করা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘সমতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বিশ্ব গড়ার জন্য জাতিসংঘের ঘোষণা বাস্তবায়নে আমাদের প্রতিশ্রুতি পূরণে বহুপাক্ষিক সহযোগিতা প্রয়োজন।’
এসময় সহযোগিতার ক্ষেত্র তৈরিতে পাঁচটি প্রস্তাব তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১. এই সময়ের সবচেয়ে জরুরি আহ্বান হলো, ধনী এবং দরিদ্রের মধ্যে ‘ভ্যাকসিন বিভাজন’ দূর করা।
২. আমাদের একটি নতুন দৃষ্টান্ত দরকার, যা সামগ্রিকভাবে বৈষম্যের সমাধান করবে। এর সঙ্গে দারিদ্র্য, ক্ষুধা, লিঙ্গ সমতা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি তথা এসডিজির গভীর সম্পর্কে রয়েছে।
৩. স্বল্পোন্নত ও জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য বিশেষ অর্থায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
৪. অভিবাসী মানুষের ভঙ্গুরতা মোকাবিলা করা অপরিহার্য।
৫. বিকশিত ডিজিটাল যুগে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে ‘ডিজিটাল বিভাজন’ দূর করতে হবে।
সমাজের প্রকৃত ‘চেঞ্জমেকার’ হিসেবে নারী এবং কন্যাশিশুদের ভূমিকা নিশ্চিত করতে তাদের আরও সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে বলেও জানান শেখ হাসিনা।
‘আমাদের অভিন্ন এজেন্ডা’ সম্পর্কিত জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রতিবেদনে বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান বৈষম্যের উদ্বেগজনক চিত্র ফুটে ওঠেছে জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারি সবচেয়ে দরিদ্র এবং সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে আঘাত করেছে। দারিদ্র্য, বৈষম্য কমাতে আমাদের কয়েক দশকের অর্জন দ্রুত পিছিয়ে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের সংবিধান ‘সকল নাগরিকের সুযোগের সমতা’ নিশ্চিত করে।”
প্রধানমন্ত্রী এসময় জাতির পিতার কথা স্মরণ করে বলেন, “১৯৭৪ সালে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে দেয়া বক্তৃতায় আমাদের জাতির পিতা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘প্রত্যেকের নিজের এবং তার পরিবারের স্বাস্থ্য এবং কল্যাণে উপযুক্ত জীবনযাত্রা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক দায়িত্ব রয়েছে।”
বঙ্গবন্ধুর এই উদ্ধৃতি ওই সময়ের তুলনায় বর্তমানে আরও প্রাসঙ্গিক বলে মনে করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই চেতনাকে ধরে রেখে, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা নিশ্চিত করতে আমরা একটি সামগ্রিক পন্থা নিয়েছি। একইসঙ্গে কোভিডের ক্ষতি পুষিয়ে নিতেও একটা পন্থা রয়েছে যেখানে, ‘বাদ যাবে না কেউ।”
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টার কেন্দ্রে রাখা হয়েছে সমাজের সবচেয়ে দুর্বল অংশকে। এদের মধ্যে আছেন নারী, অতি দরিদ্র, জাতিগত সংখ্যালঘু, প্রতিবন্ধী মানুষ এবং অন্যান্য দুর্বল জনগোষ্ঠী।’