নড়াইল নিউজ ২৪.কম ডেস্ক:
রংপুরের পীরগঞ্জের জেলে পাড়ায় হিন্দুদের বাড়িতে হামলা করার আগে ফেসবুকে পোস্টের পর মাইকিংয়ের মাধ্যমে লোক জড়ো করা হয়। আর গ্রেপ্তার সৈকত মণ্ডলই এ ঘটনার হোতা বলে জানিয়েছে র্যাব। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শনিবার দুপুরে কারওয়ান বাজার মিডিয়া সেন্টারে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন বাহিনীটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে শুক্রবার রাতে টঙ্গী থেকে সৈকত মন্ডল ও তার সহযোগী রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
গণমাধ্যম শাখার প্রধান কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতরা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে অরাজকতা তৈরি এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের লক্ষ্যে হামলা-অগ্নিসংযোগ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার এবং মাইকিং করে হামলাকারীদের জড়ো করে বলে জানিয়েছে। গ্রেপ্তার সৈকত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানিমূলক, বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যাচারের মাধ্যমে স্থানীয় জনসাধারণকে উত্তেজিত করে তোলে। এ ছাড়া, সে উক্ত হামলা ও অগ্নিসংযোগে অংশগ্রহণে জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করে।’
ফাইল ছবি
র্যাব বলছে, সৈকতের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন হামলায় সরাসরি অংশগ্রহণ করে বাড়িঘর, দোকানপাট ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। সৈকত গ্রেপ্তারকৃত রবিউলকে মাইকিং করে লোকজন জড়ো করতে নির্দেশনা দিয়েছিল। ঘটনা পরবর্তী সৈকত আত্মগোপনে চলে যায়।
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গ্রেপ্তারকৃত সৈকত মন্ডল রংপুরের একটি কলেজের স্নাতকে অধ্যয়নরত। সে রংপুর পীরগঞ্জের হামলা এবং অগ্নিসংযোগের অন্যতম হোতা। সে বিভিন্ন সময়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন উসকানিমূলক ও বিভ্রান্তিকর পোস্ট দিত এবং শেয়ার করত।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃত রবিউল রংপুরের পীরগঞ্জের হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অন্যতম উসকানিদাতা। সে উক্ত হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার আগে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মাইকিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে, মিথ্যাচার করে গ্রামবাসীকে উত্তেজিত করে তোলে এবং ওই হামলায় অংশগ্রহণের জন্য জড়ো হতে বলে।
ফাইল ছবি
‘এরপর সে মাইকিংয়ের দায়িত্ব তার আস্থাভাজনকে দিয়ে নিজে সশরীরে অংশগ্রহণ করে এবং নির্দেশনা দেয়। গ্রেপ্তার রবিউল জানায়, সৈকতের নির্দেশনায় এবং প্ররোচনায় সে মাইকিং করাসহ হামলায় অংশগ্রহণ করে। ঘটনা পরবর্তীতে সেও আত্মগোপনে চলে যায়।’
র্যাব জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টায় কুমিল্লা, নোয়াখালী, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, ফেনী এবং রংপুরসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় স্বার্থন্বেষী মহলের অপতৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে। এ ছাড়া, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের লক্ষ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানিমূলক, বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির অপচেষ্টা করছে চক্রান্তকারীরা।
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, এসব সহিংসতায় জড়িত থাকার সন্দেহে র্যাবের গোয়েন্দা শাখা ও বিভিন্ন ব্যাটালিয়নের অভিযানে প্রায় ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।