স্টাফ রিপোর্টার:
নড়াইল জেলায় গত ৬ মাসে সহিংসতায় ১১জনকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। আহত হয়েছেন শতাধিক। সহিংসতার পর বাড়ি ভাংচুর-লুটপাট, জোরপূর্বক ফসল কেটে নেওয়া এবং আসামি পক্ষকে বাড়িতে উঠতে না দেওয়ারও ঘটনা ঘটছে। এদিকে এসব সহিংস ঘটনার বেশ কয়েকটিতে ১৫-২১ বছরের কিশোর ও তরুণরা জড়িত বলে জানা গেছে। সামান্য বিষয় নিয়েই শুরু হয় মারামারি। দিন দিন সহিংস ঘটনা যেন বেড়েই চলেছে।
স্থানীয় সূত্র নড়াইল নিউজ ২৪.কমকে জানায়, সর্বশেষ হত্যকান্ডের ঘটনা ঘটে গত ২১মে। ওইদিন গভীর রাতে কালিয়া উপজেলার পেড়লি ইউনিয়নের জামরিলডাঙ্গা গ্রামের নূরুল খন্দকারের স্ত্রী ছালেহা বেগম (৭৫) বাড়ির বারান্দায় ঘুমিয়ে থাকা অবস্থা দুবৃত্তরা তাকে পুড়িয়ে হত্যা করে। গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর এই বৃদ্ধার ছেলে আরিফ সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হন।
৮মে তুলারামপুর ইউনিয়নের মালিডাঙ্গা গ্রামে স্বামী কর্তৃক নববধূ স্ত্রী মিম সুলতানাকে(১৯) স্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ ওঠে। ২৫ এপ্রিল কালিয়া পৌরসভার বড়কালিয়া এলাকার সাদাত ব্যাপারির ছেলে রুবেল ব্যাপারি (২৮) নিহত হয়। ১৯ এপ্রিল লোহাগড়া উপজেলার বাতাসি গ্রামের আব্দুল মান্নান মিয়ার ছেলে পুলিশ কর্মকর্তা এস.আই সালাউদ্দিন (৪৮) ছোট ভাই জসিম উদ্দীনের লাঠির আঘাতে খুন হয়। ২০ ফেব্রুয়ারী পাঁচগ্রাম ইউনিয়নের মহিষখোলার আবুল হোসেনের ছেলে আল আমিন (২৮) এক সংঘর্ষে খুন এবং ১০জন আহত হয়। এ ঘটনায় আসামি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল হকসহ ৩০-৩৫টি পরিবারের পুরুষরা এলাকা ছাড়া।
১৬ ফেব্রুয়ারী হবখালী ইউনিয়নের চর-সিংঙ্গিয়া গ্রামে শফিয়ার মোল্যার ছেলে সাবু মোল্যা (৩২) খুন হয়। ১৯ জানুয়ারী পাঁচগ্রাম ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া গ্রামের মোজাফফর ফারাজির ছেলে আজমল ফারাজি (৪৫) জেলার সারুলিয়া এলাকায় নবগঙ্গা নদীতে বালুর ট্রলারে বালু উত্তোলনের সময় রহস্যজনকভাবে নিহত হয়। ১৪ জানুয়ারী চন্ডিবরপুর ইউনিয়নের সাবেক মেম্বর ভুমুরদিয়া গ্রামের ছানোয়ার মোল্যা (৬৫) খুন হয়। ৩ ডিসেম্বর দিঘলিয়া ইউনিয়নের দিঘলিয়া গ্রামের ইশারত বিশ্বাসের ছেলে বিল্লাল বিশ্বাস(৫৫) খুন হয়।
২৫ নভেম্বর তুলারামপুর ইউনিয়নের বামনহাট সড়ক থেকে দুবৃত্তরা জেলার সিঙ্গিয়া গ্রামের চাঁন মোল্যার পূত্র রোহান মোল্লাকে(২০) হত্যা করে তার ইজিবাইকটি নিয়ে যায়। ১০নভেম্বর কালিয়ার বাঐসোনা গ্রামে এক সংঘর্ষে পার্শ্ববর্তী কলাবাড়িয়া গ্রামের ফায়েক ফকিরের পূত্র রায়হান ফকির (২৮) খুন ও ২০জন আহত হয়।
এছাড়া ২৪ এপ্রিল শহরের আলাদাতপুর, ২৩এপ্রিল লক্ষীপাশা, ২২এপ্রিল কুমড়ি, ৬এপ্রিল শহরের ধোপাখোলা, ৫এপ্রিল পুরুলিয়া, ২৪এপ্রিল খলিশাখালী, ২৪এপ্রিল নোয়াগ্রামসহ আরও একাধিক এলাকায় পৃথক পৃথক সহিংস ঘটনায় দু’পুলিশ, দু’নারীসহ প্রায় অর্ধশত মানুষ আহত হয়েছেন।
নড়াইলের পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় জেলার আইন শৃংখলা পরিস্থিতি বর্তমানে অনেক ভালো দাবি করে নড়াইল নিউজ ২৪.কমকে বলেন, নড়াইলে গরুতে ঘাস-পাতা খাওয়ানোর মতো সামান্য ঘটনা নিয়ে মারামারি সংঘটিত হয়। সেই বিচার করলে প্রতিদিনই সহিংস ঘটনা ঘটবার কথা। এটা অনেকটা এখানকার প্রথা। আমি নড়াইলে তিন মাস আসার পর সহিংস ঘটনা হয়নি বললেই চলে।