স্টাফ রিপোর্টার:
নড়াইলে পুলিশ কর্তৃক সাংবাদিক হয়রানির প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাংবাদিক সমাজ, নড়াইলের আয়োজনে নড়াইল প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন নড়াইল প্রেসক্লাবের সভাপতি এনামূল কবির টুকু, সাধারন সম্পাদক শামীমূল ইসলাম টুলু, সাংবাদিক কার্ত্তিক দাস, কাজী হাফিজুর রহমান, মলয় কান্তি নন্দি, সাইফুল ইসলাম তুহিন, সাথী তালুকদার, লোহাগড়া প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক শেখ বদরুল আলম টিটো, কালিয়ার সাংবাদিক ওমর ফারুক প্রমূখ।
মানবন্ধনে বক্তরা বলেন, পুলিশ সুপারের নির্দেশে সাংবাদিকের বাড়িতে গভীররাতে পুলিশের অভিযান অত্যান্ত দু:খজনক। পুলিশের এহেন আচারন কোন সভ্য সমাকে কাম্য নয়। সাংবাদিক সংবাদ পরিশেন করেছেন ভূক্তভোগিদের বক্তব্য নিয়ে এখানে সাংবাদিকে বক্তব্য নয়। তবে কেন সাংবাদিকে হয়রানির স্বিকার হবে ?
আগামীকাল শনিবার (২৫ সেপ্টম্বর) লোহাগড়ায় এবং রোববার (২৬ সেপ্টম্বর) কালিয়া উপজেলায় মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষনা করা হয়। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বারাষ্ট্রমন্ত্রীর নিকট স্মারক লিপি প্রদান করা হবে। জেলায় কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশগ্রহন করেন।
উল্লেখ্য , “নড়াইলে পুলিশের হয়রানির প্রতিবাদে ইজিবাইক চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে শ্রমিকরা” শিরোনামে নড়াইল নিউজ ২৪.কম এ সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় তেলেবেগুনে জ্বলছেন পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায়। বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সংবাদটি প্রকাশিত হয়।
সংবাদ প্রকাশের পর বুধবার রাত সাড়ে ৯ টার পর সদর থানার ওসি অপারেশন শিমুল কুমার দাস প্রথমে ফোন করে থানায় যেতে বলেন। পরে সদর থানার ওসি শওকত কবিরের সাথে কথা হয়। কি কারনে পুলিশ অফিসে যেতে হবে জানার জন্য পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায়ের সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আপনাকে তো ধরতে লোক পাঠিয়েছি। আপনার ‘এতবড় সাহস হল কি করে, পুলিশের বিরুদ্ধে নিউজ করেন’। এখনই আমার সাথে এসে দেখা করেন, প্রয়োজনে আপনার সভাপতি-সম্পাদককে সাথে নিয়ে আসেন।
তাৎক্ষনিক নড়াইল প্রেসক্লাবের সভাপতি এনামুল কবীর টুকু এবং সাধারণ সম্পাদক শামীমূল ইসলাম টুলুসহ অন্যান্যদের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয়। নড়াইল প্রেসক্লাবের সভাপতি এনামুল কবীর টুকু এ বিষয়টি নিয়ে পুলিশ সুপারের সাথে কথা বললে তিনি (এসপি) বলেন, আমি তো আপনাকে আসতে বলিনি। প্রেসক্লাবের সভাপতি এসময় বলেন, আমরা বৃহস্পতিবার (২৩সেপ্টম্বর) সকালে আপনার অফিসে দেখা করবো। জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, না এখনই আসতে হবে ওকে (শরিফুল ইসলাম বাবলু)।
এরপর পুলিশ সুপারের নির্দেশে সদর থানার ওসি এবং ডিবির ওসি’র নেতৃত্বে পুলিশের দু’টি গাড়ি রাত ১২ টার দিকে ইজিবাই সমিতির সভাপতি মাছুম জমাদ্দারকে সাথে নিয়ে নড়াইল প্রেসক্লাবের সদস্য দেশ টেলিভিশন এর নড়াইল জেলা প্রতিনিধি এবং নড়াইল নিউজ ২৪.কম এর সম্পাদক ও প্রকাশক শরিফুল ইসলাম বাবলুর বাড়িতে তাঁকে তুলে আনার জন্য অভিযান চালায়। সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম বাবলু বাসায় না থাকায় পুলিশ বাসার পাশে প্রায় ১৫-২০ মিনিট অবস্থান করে চলে যায়। ইজিবাই সমিতির সভাপতি মাছুম জমাদ্দার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ ব্যাপারে গোয়েন্দা শাখার (ডিবি ওসি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুকান্ত সাহা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘এসপি স্যার বাবলু ভাইকে যেতে বলেছিলেন, তিনি যাননি। তার পর বাবলু বাইযের ফোন বন্ধ ছিল । তাই খোঁজ নিতে এসেছিলাম।’
সদর থানার ওসি শওকত কবির বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বলেন, আমি বুধবার রাতে সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম বাবলুর বাড়িতে পুলিশের গাড়ি নিয়ে যাইনি।
পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘পুলিশ কেন হয়রানি করবে, পুলিশ আইন প্রয়োগ করার চেষ্টা করেছে। সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম বাবলুর বাড়িতে রাত ১২টায় পুলিশের দু’টি গাড়ি যাওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো , সে লিখছে যে পুলিশের হয়রানি, এ মিথ্যা কথা সে লিখেছে কেন পেপারে ? অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম বাবলুর বাড়িতে কোন পুলিশ পাঠাইনি। আমি তাকে আমার অফিসে আসতে বলেছিলাম, সে আসেনি।’
আরও পড়ুন:
নড়াইলে ইজিবাইক চালকদের ৭ দিনের সময় দিলের পুলিশ সুপার