স্টাফ রিপোটার
সরকারের উন্নয়ন কাজে বাধা দেওয়ার নিউজ না প্রচার করলে টেলিভিশন বন্ধের হুমকি দিয়েছিলেন নড়াইল জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও নড়াইল ভিশনের মালিক ওয়াহিদুজ্জামান। এর আগে বিভিন্ন অজুহাতে বৈশাখী টেলিভিশন, দেশ টিভি ও বাংলাভিশন চ্যানেল বন্ধ করে রেখেছেন তিনি।
এ ছাড়াও তিনি সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের নির্দেশনা না মেনে বাংলাদেশী টিভি চ্যানেল গুলো সাজিয়েছেন নিজের ইচ্ছে ও পছন্দ মতো। আনন্দ টিভি, মাইটিভি, ইনডিপেনডেন্ট টিভি, বাংলা টিভি, নাগরিক টিভি, মোহনাটিভিসহ একাধিক টিভি তিনি সরকারি সিরিয়াল না মেনে ৯,১০,১২,১৩,১৪ ও ১৭ নম্বরে দিয়েছেন।ক্ষমটার দাপট দেখিয়ে নড়াইল জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও নড়াইল ভিশনের মালিক ওয়াহিদুজ্জামান গত ২৬ সেপ্টম্বর তারিখ সন্ধ্যার পরে নড়াইল প্রেসক্লাবে সরাসরি উপস্থিত হয়ে হুমকি দিয়েছিলেন ২৭ সেপ্টম্বর তারিখ নড়াইল শহরের মধ্যদিয়ে ফোরলেন সড়ক নির্মানে বাধা দেওয়ার জন্য মানববন্ধন করা হবে সেটা যেসব সাংবাদিকরা তাদের চ্যানেলে দেখাতে পারবেনা তাদের টেলিভিশন চ্যানেল বন্ধ করে দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নড়াইল জেলা টেলিভিশন জার্নালিষ্ট এ্যসোসিয়েশনের সভাপতি এম মুনীর চৌধুরী সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমার এনটিভিতে ওই নিউজ দেখিয়েছে সুতরাং আমার চ্যানেল হয়তো বন্ধ করবেন না।
নড়াইল জেলা টেলিভিশন জার্নালিষ্ট এ্যসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক মাহবুবুর রশিদ লাভলু বলেন, মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান ভাই আমাকে ফোন করে বলেছিলেন নিউজটা কাভার দেওয়ার জন্য। আমি সেই কারনে সকল সদস্যকে ম্যাসেজ দিয়ে জানিয়েছিলাম নিউজটা কাভারের জন্য এবং আমি নিজে ও ওই নিউজ টেলিভিশনে কাভার দিয়েছি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে আমার আইডি থেকে লাইভ দিয়েছি।
এর আগে ওহিদুজ্জামান কয়েকজন টেলিভিশনের সাংবাদিকদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে চ্যানেল বন্ধ করে দিয়েছিলেন। যেমন সাইফুল ইসলাম তুহিন চ্যানেল-২৪ ও এস এম হাফিজুল করিম মোহনা টিভি।
সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ করার জন্য মানববন্ধনের সকল দোকানদার দোকানঘর বন্ধ করতে বললেও তারা বন্ধ করেননি এবং মানববন্ধনে অংশগ্রহন করেননি। বরং এক পর্যায়ে জেলা যুবলীগের আহবায়ক মোঃ ওয়াহিদুজ্জামানের জীপগাড়ির গ্লাস ভাঙচুর করে কে বা কারা ।
নিউজ না দেখালে টেলিভিশন বন্ধের হুমকি ও টেলিভিশন চ্যানেল সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সিরিয়াল না করার বিষয়ে জানতে চাইলে যুবলীগের আহ্বায়ক ও নড়াইল ভিশনের মালিক মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান বলেন,আমি দাবী করে বলেছি সারা বছর চ্যানেল চালাবো একদিন দাবী করতেই পারি।
এ বিষয়ে প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমানের সাথে একাধিক মুুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে ও ফোন রিসিভ করেননি।
অপরদিকে এই জেলা যুবলীগের আহবায়ক সম্পর্কে গতকাল পৌর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মেসকাতুল ওয়ায়েজিন লিটু তার ফেইসবুক Meskat Litu লিখেছেন।
জানেন কি ???
নড়াইল পৌরসভার রুপগঞ্জ বাজারের এক নং সুপার মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একটি অফিস ছিল। বিএনপির একজন নেতা যখন পৌর মেয়র নির্বাচিত হল তখন ছাত্রলীগের অফিস উচ্ছেদ করার উদ্যোগ গ্রহন করে। দুর্নিতীর মাধ্যমে ও ছাত্রলীগের অফিস উচ্ছেদের শর্তে বাজারের একজন পয়সাওয়ালা ব্যাবসায়ীকে লিখে দেয়। সে ব্যাবসায়ী ছাত্রলীগকে সুন্দর অফিস করে দিবেন মর্মে অঙ্গীকার করে দ্বিতীয় তলার দখল বুঝে নেয়। সম্পুর্ন প্রতারনা করে সে সেখানে একটি কম্যুনিটি সেন্টার চালু করে দেয়। ছাত্রলীগ তাদের দাবী জানাতে গেলে সে প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দেয় এবং প্রশাসনের ভয়ভীতি দেখায়। বংশধর ও আত্মীয়স্বজন সব জামাত-বিএনপি হলেও সে এখন বিরাট আওয়ামিলীগ ।
উক্ত মার্কেটে অবৈধভাবে বিএনপির মেয়রের সাথে যোগসাযসে ও অনিয়ম দুর্নিতীর আশ্রয় নিয়ে প্রায় (আনু) শতাধিক দোকান ঘরের মালিক বনে গেছে। রাস্তা ঘাট তার প্রয়োজন নাই, তার প্রয়োজন অবৈধ সম্পত্তি রক্ষা করা। কিছু বোকা পাবলিক তার মিষ্টি কথায় হাজার হাজার টকা চাদা দিয়েছে হাইকোর্ট করে উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ করার জন্য,এমন জনশ্রুতি রয়েছে। আজও তাকে বিএনপি দ্বারা পরিবেষ্টিত দেখা গেছে।
নড়াইল জেলার মানুষের অতীত ইতিহাস আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাস। অনেক বঞ্চনার শিকার নড়াইলবাসী উন্নয়নের ব্যাপারে কাউকে ছাড় দিতে রাজি নয় ।
উল্লেখ্য, নড়াইল শহরের প্রস্তাবিত সড়কটি চারলেনে করার পক্ষে-বিপক্ষে মানববন্ধন কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে শহরে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে চেষ্টা চালাচ্ছেন জেলা প্রশাসনের উর্দ্ধোতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
এর আগে মানববন্ধনে অংশগ্রহনের জন্য উভয় পক্ষের লোকজন আসতে শুরু করেছে। সোমবার সকালে উভয় পক্ষ নড়াইল রুপগঞ্জ এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচির ডাক দেয়। শহরের গুরুত্বপূর্ণস্থানে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
চারলেনের পক্ষে এসময় জেলা আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজার পিতা গোলাম মর্তুজা স্বপন, জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি সরদার আলমগীর হোসেন আলম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি তারিকুল ইসলাম উজ্জ্বল, সাধারন সম্পাদক এস এম পলাশ, পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক মাসুম জুলহাস ববি, সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাঈম ভূঁইয়া, সাধারন সম্পাদক সিদ্ধার্থ সিংহ পল্টু দলীয় নেতৃবৃন্দসহ ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে চারলেনের বিপক্ষে জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ওয়াহিদুজ্জামান, নজরুল ইসলামসহ কিছু সংখ্যক ব্যবসায়ীরা তার সাথে ছিলেন।