নড়াইল নিউজ ২৪.কম ডেস্ক:
বাম গণতান্ত্রিক জোট দ্রব্যমূল্যের ভয়াবহ ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে আগামী ২৮ মার্চ আধাবেলা হরতাল ডেকেছে। শুক্রবার (১১ মার্চ) পল্টন কমিউনিস্ট পার্টির অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন জোটের সমন্বয়ক সাইফুল হক।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জোটের সাবেক সমন্বয় বজলুর রশিদ, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, বাম নেতা নজরুল ইসলাম, মানস নন্দী, মোশরেফা মিশু, লূনা নূর, আনোয়ার হোসেন রেজা প্রমুখ।
জোটের সমন্বয়ক সাইফুল হক আরও জানান, তেল, চাল, ডাল, পিঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ভয়াবহ ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এবং গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির মূল্য বৃদ্ধির অপতৎপরতা বন্ধের দাবিতে আগামী ২৮ মার্চ সারা দেশে আধা দিবস হরতাল পালন করবে বাম গণতান্ত্রিক জোট। এদিন সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ হরতাল কর্মসূচি পালিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সাইফুল হক বলেন, হরতাল সফল করতে সারাদেশে সভা, সমাবেশ, পদযাত্রা, মিছিল, বিক্ষোভ ও প্রচারপত্র বিলি করার কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। নিজেদের বাঁচার প্রয়োজনে জনগণকে দেশব্যাপী হরতাল কর্মসূচি সফল করতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই। একইসঙ্গে আমরা সব বাম প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক ও দেশপ্রেমিক দল, সংগঠন, শ্রেণি পেশার সংগঠন ও নেতাদের স্ব-স্ব অবস্থান থেকে একইদিন হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা, সমর্থন ও বাস্তবায়নে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।
সাইফুল হক বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় অতি জরুরি খাদ্যপণ্যের অস্বাভাবিক ও লাগামহীন মূল্য বৃদ্ধিতে দেশের মানুষ আজ নাকাল। গরিব ও স্বল্প আয়ের কোটি কোটি মানুষের খাদ্য গ্রহণ কমে গেছে। জনগণের এক বড় অংশ দুই বেলাও ভালভাবে খেতে পারছে না। এ অবস্থা চলতে দিলে দেশ আবারও দুর্ভিক্ষাবস্থায় নিপতিত হতে পারে।
বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের কার্যকর কোনো মনিটরিং না থাকায় মুনাফাখোর অসৎ সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী দেশের মানুষকে পুরোপুরি জিম্মি করে ফেলেছে বলে উল্লেখ করেন সাইফুল হক। তিনি বলেন, প্রতিদিন ভোক্তাদের পকেট থেকে তারা হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আমদানিকারক, মিলার, আড়তদার, মজুতদার, ফড়িয়া মধ্যস্বত্ত্বভোগী সিন্ডিকেটের সঙ্গে সরকারের অশুভ আঁতাতের কারণে প্রতিটি খাদ্যপণ্যের দাম আজ আকাশচুম্বী।
তিনি আরও বলেন, খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সাথে পাল্লা দিয়ে গত ১০ বছরে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ৯০ শতাংশ, গ্যাসের দাম বেড়েছে ১৪৮ শতাংশ, ডিজেলের দাম বেড়েছে ৮২ শতাংশ, আর পানির দাম বেড়েছে ২৬৪ শতাংশ। এর মধ্যে আবার চরম স্বেচ্ছাচারী পন্থায় পানির দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে ৬০ শতাংশ, গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবনা রয়েছে ১১৭ শতাংশ আর তেলের দাম বৃদ্ধির কোনো সীমারেখা নেই। এটি স্পষ্ট যে চাল-ডাল-পেঁয়াজ সিলিন্ডার গ্যাসসহ অতি জরুরি খাদ্য দ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির যৌক্তিক কোনো কারণ নেই।
এর আগে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ, রেশনিং ব্যবস্থা চালু, কালো আইন বাতিল, গণতান্ত্রিক নির্বাচনী ব্যবস্থা চালু, ২০ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি ও গণতান্ত্রিক শ্রম আইন প্রণয়ন, কৃষি পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা এবং নারী নির্যাতন-নিপীড়ন বন্ধের দাবিতে ১৫ দিনের কর্মসূচি দিয়েছে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)।
বাসদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী ১৩ থেকে ২৭ মার্চ সারা দেশে হাটসভা, পথসভা, পদযাত্রা, মানববন্ধন, জনসংযোগসহ নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করা হবে।