নড়াইল নিউজ ২৪.কম ডেস্ক:
১১০ কোটি টাকা পাচারের মামলায় বাগেরহাটের নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবদুল মান্নান তালুকদারের জামিন বাতিল করে দুই সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতিসহ ছয় বিচারকের আপিল বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। এছাড়া কোম্পানির চেয়ারম্যান আনিসুর রহমানের জামিন স্থগিতাদেশ বহাল রাখা হয়েছে।
আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও আসিফ হোসেন। আসামিদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস ও আশরাফ আলী।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৩০ মে বাগেরহাট সদর মডেল থানায় নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের এমডি আবদুল মান্নান তালুকদার ও চেয়ারম্যান আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে ১১০ কোটি ৩১ লাখ ৯ হাজার ১৩৫ টাকা ৫৮ পয়সা অবৈধ সম্পদ অর্জন, অপরাধলব্ধ আয় স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগে মামলা করে দুদক।
মামলার এজাহারে বলা হয়, কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ১০ কোটি টাকা। কোম্পানির মোট এক হাজার শেয়ারের মধ্যে আবদুল মান্নান তালুকদার ৮৫০টি, চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান ৫০টি, তার মা সালেহা বেগম ও স্ত্রী জেসমিন নাহার ৫০টি করে ১০০টির মালিক। প্রকৃতপক্ষে নিউ বসুন্ধরার চেয়ারম্যান হিসেবে আনিসুর রহমানের নাম থাকলেও প্রতিষ্ঠানটির সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করেন এমডি আবদুল মান্নান তালুকদার।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০১০ সালে বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী (এমএলএসএস) আবদুল মান্নান তালুকদার স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট লিমিটেড নামের একটি জমি কেনাবেচার প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলার পর তিনি গ্রাহকদের প্রতি লাখে মাসে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা করে দেয়ার প্রলোভন দেখান।
এছাড়া আবদুল মান্নান তালুকদার বাগেরহাট, খুলনাসহ বেশ কয়েকটি জেলার অন্তত ২০ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে কমপক্ষে ২৯৯ কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করেন, যা ব্যাংকিং আইনের বিরোধী।
কয়েক বছরে বাগেরহাটের ১৬টি ব্যাংকের ৩০টি হিসাবে (অ্যাকাউন্ট) ১১০ কোটি ৩১ লাখ ৯ হাজার ১৩৫ টাকা ৫৮ পয়সা জমা করেন আবদুল মান্নান। গ্রাহকদের কাছ থেকে নেয়া এই বিপুল পরিমাণ অর্থ তিনি ব্যাংক থেকে তুলে পাচার করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে।
এ মামলায় জামিন চেয়ে আবেদন করলে গত বছরের শেষের দিকে আসামিদের জামিন দেন হাইকোর্ট। জামিন পেয়ে কারামুক্তও হন তারা। এর মধ্যে দুদক ওই জামিনের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে।
চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল আনিসুর রহমানকে আত্মসমর্পণ করতে বলেন আপিল বিভাগ। সে অনুযায়ী তিনি আত্মসমর্পণ করে এখন কারাবন্দি। অপর আসামি আবদুল মান্নান তালুকদারের জামিন বাতিল করে আজ (বৃহস্পতিবার) আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত।