নড়াইল নিউজ ২৪.কম ডেস্ক:
ভূমিহীন হওয়ায় তাকে মুজিববর্ষ উপলক্ষে দেয়া হয় উপহারের ঘর। গত বছরের ২০ জুন থেকে পরিবার নিয়ে ওই ঘরে বসবাস শুরু করেন। তারপরে কলার ব্যবসা শুরু করেন তিনি। ব্যবসায় লাভও হয়েছে। লাভের টাকায় নিজ নামে কিনেছেন ৮ শতক জমি। বতর্মানে তিনি এক খণ্ড জমির মালিক। এখন আর ভূমিহীন নন জমির। তাই প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহারের ঘর ফেরত দিয়েছেন তিনি।
এতক্ষণ বলছিলাম চুয়াডাঙ্গা জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের শাহাপুর গ্রামের মৃত খেদের বিশ্বাসের ছেলে জমির উদ্দীন বিশ্বাসের কথা।
উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম জানিয়েছেন, জমিরের সততা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। আজ তার সঙ্গে কথা বলতে পারেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জমির উদ্দিন বিশ্বাস বলেন, ‘আমি দিনমজুর ছিলাম। কোনো রকমে চলতো আমার। আমি ভূমিহীন হওয়ায় মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরসহ জমি পাওয়ার জন্য জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করি।
‘আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছর আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের শাহাপুর মৌজার ১ নম্বর খতিয়ানের ১৩৩৭ নম্বর দাগে আশ্রায়ণ প্রকল্পে দুটি কক্ষের একটি সেমিপাকা ঘর আমাকে বরাদ্দ দেয়া হয়। সেখানে বসবাসও শুরু করি।’
তিনি বলেন, ‘তারপর বিভিন্ন বাজারে কলা বেচা-কেনার ব্যবসা শুরু করি। এতে প্রতি মাসে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় হয়েছে। লাভের টাকা দিয়ে গ্রামেই ৮ শতক জমি কিনেছি। ওই জমির উপর ঘরও তৈরি করেছি। এখন আমি আর ভূমিহীন নই।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু আমার নিজের মাথা গোঁজার একটা ঠাঁই হয়েছে। এ কারণে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহারের ঘর ও জমি ফিরিয়ে দিয়েছি। সমাজে আরও ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার আছে, এই ঘরটা এখন তাদের প্রাপ্য। আমি চাই এই ঘরটা অন্য কোনো ভূমিহীন পরিবারকে দেয়া হোক।’
আন্দুলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ শফিকুল ইসলাম মুক্তার বলেন, ‘জমির প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর ফেরত দিয়ে এলাকায় একটা নজির স্থাপন করেছেন। তার এই সততার কারণে এলাকার সবাই তাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।’
জীবননগর উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘স্বাবলম্বী হয়ে নিজে জমি কিনে ঘর করার পর গত ১৮ জানুয়ারি লিখিত আবেদন করে উপহারের ঘর ও জমির দলিল ফেরত দেন জমির। একই সঙ্গে তিনি জমিসহ ঘরটি অন্য ভূমিহীন পরিবারকে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ বুধবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি জমির উদ্দীনের সঙ্গে কথা বলতে পারেন।’