কালিয়া প্রাণি সম্পদ বিভাগ: প্রধানমন্ত্রীর প্রনোদনার টাকা নিয়ে নয়ছয়ের অভিযোগ কালিয়া প্রাণি সম্পদ বিভাগ: প্রধানমন্ত্রীর প্রনোদনার টাকা নিয়ে নয়ছয়ের অভিযোগ – Narailnews24.com-নড়াইল নিউজ ২৪
সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ০৫:৫৪ পূর্বাহ্ন

কালিয়া প্রাণি সম্পদ বিভাগ: প্রধানমন্ত্রীর প্রনোদনার টাকা নিয়ে নয়ছয়ের অভিযোগ

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১
ছবি:- নড়াইল নিউজ ২৪.কম

বিশেষ প্রতিনিধি, নড়াইল নিউজ ২৪.কম

নড়াইলের কালিয়ায় প্রাণি সম্পদ বিভাগকে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া খামরিদের করোনাকালিন প্রনোদনার টাকা উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসের মাঠকর্মীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগ উঠেছে খামারিদের তালিকা প্রণয়নে ব্যাপক অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতিসহ খামারি না হলেও প্রনোদনার টাকা তুলে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। খামারিদের তালিকায় অখামারিদের নাম দিয়ে প্রনোদনার টাকা নয়ছয় করার প্রতিকারসহ দূর্নীতিবাজদের বিচারের দাবিতে উপজেলার উথলী গ্রামের বাদপড়া খামারিরাসহ গ্রামবাসিরা সোমবার বিকালে কালিয়া-খুলনা সড়কের বেন্দার মোড় নামক স্থানে মানববন্ধন করেছেন। জানিয়েছেন বিচারের দাবি।

উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিস সুত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর দেয়া করোনাকালিন প্রনোদনার সহায়তার টাকার প্রদানের জন্য উপজেলার ইউনিয়ন ও পৌরসভায় নিয়োগকৃত মাঠকর্মীদের দায়িত্ব দেয়া হয়। সে হিসেবে প্রথম কিস্তিতে ২০৩ জন গরু খামারি, ৫২ জন হাস খামারি, ও ১২৫ জন বয়রার খামারি ও দ্বিতীয় পর্যায়ে ৪৭ জন গরুর খামারি, ১১৮ জন বয়লার ১১৩ জন মুরগীর খামারির নাম তালিকাভূক্ত করা হয়েছে। তালিকাভূক্তরা ইতিমধ্যেই প্রনোদনার টাকাও তুলে নিয়েছেন। তবে উপজেলায় ১৯৩টি গরুর খামার, ১৭৫টি মুরগীর খামার ও ৬৪টি হাসের খামারের রেজিষ্ট্রেশন রয়েছে বলে ওই অফিস সুত্রে জানা গেছে।

উপজেলার কালিয়া পৌরসভার ওইসব খামারিদের তালিকা প্রণয়নে খামার না থাকলেও খামারি বানিয়ে মাঠকর্মী সানিয়া খানমসহ ওই অফিসে কর্মরত একটি চক্র স্বজনদের নাম ব্যবহার করে হাতিয়ে নিয়েছেন বলে উথলী গ্রামের শওকত ফকির, মারিয়া বেগম ও শামিম শেখসহ অনেকেই সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছেন।

সরেজমিনে অনুসন্ধ্যান চালাতে গিয়ে জানা যায়, প্রনোদনার তালিকায় থাকা এলডিডিপির মাঠকর্মী সনিয়ার স্বামী আব্দুল্লাহ আল মামুন গরুর খামারী হিসাবে ১০ হাজার টাকা পেলেও তার কোন গরুর খামার পাওয়া যায়নি। রামনগর গ্রামের আছাদ শেখের ছেলে সুমন শেখ ১০ হাজার টাকা প্রনোদনা পেলেও তার খামার নেই। উথলী গ্রামের তাহিরুল ইসলাম সুমন একজন মুরগীর খামারি হিসাবে ১০ হাজার টাকা পেয়েছেন। কিন্তু তার কোন মুরগীর খামারের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

উপজেলার যোগানিয়া গ্রামের মৃত সিরাজুল ইসলাম কাজির মেয়ে জান্নাতুর ফেরদৌস মুরগীর খামারি হিসেবে ১১ হাজার টাকা পেয়েছেন। একই গ্রামের বিলায়েত খন্দকারের ছেলে জাহিদুল ইসলামও প্রনোদনার টাকা পেয়েছেন বলে তার পারিবারিক সুত্র জানিয়েছেন। কিন্তু তাদের বাড়িতে খোঁজ নিয়ে খামারের কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তবে উল্লিখিতরা নিজেদেরকে খামারি হিসেবে দাবি করেছেন।

প্রকৃত খামারিদের বাদ দিয়ে খামার না থাকলেও খামারি বানিয়ে প্রনাদনার টাকা হাতিয়ে নেয়ার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে সোমবার বিকালে দিকে উপজেলার বেন্দা ও উথলী গ্রামের বাদপড়া খামার মালিকরাসহ গ্রামবাসিরা কালিয়া-খুলনা সড়কের বেন্দার মোড় নামক স্থানে ঘন্টাব্যাপি মানববন্ধন করেছেন।

মানববন্ধন চলাকালে কালিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর মো মোশারেফ হোসেন, লাকছিনা বেগম ও আব্দুর রহমানসহ অংশ গ্রহনকারিরা একই ভাষায় অভিযোগ করে বলেন, প্রনোদনার তালিকা তৈরীতে কালিয়া পৌরসভার দায়িত্বে থাকা প্রাণি সম্পদ বিভাগের মাঠকর্মি সনিয়া খানম তার স্বামী ও মায়ের নামসহ নিকট আত্মীয়দের নামে তালিকা করে বিপুল পরিমান টাকা তুলে নিয়েছেন। আর প্রকৃত খামারিদের নাম বাদ দিয়েছেন এবং উপজেলায় বহু প্রকৃত প্রানি খামারি প্রনোদনার তালিকা থেকে বাদ পড়লেও খামার না থাকা বহু ভূয়া খামারি সংশ্লিষ্টদের সাথে যোগসাজসে প্রনোদনার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলেও মানববন্ধন থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।

এলডিপির মাঠকর্মীর সনিয়ার স্বামী আব্দুল্লাহ আল মামুন গরুর খামারি হিসাবে নাম লেখালেও তিনি বলেন, তার একটি মুরগীর খামার আছে। মুরগীর খামারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাঠকর্মী হিসেবে তার স্ত্রী তালিকা প্রস্তুত কমিটির কাছ থেকে ১টি নাম দেয়ার অনুমতি পেয়ে তার নামটি তালিকায় দিয়েছেন।

প্রাণি সম্পদ বিভাগের এলডিডিপি শাখার কালিয়া পৌরসভার মাঠকর্মী সনিয়া খানম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার স্বামীর নামটি আমি কর্মী হিসেবে প্রস্তুত করা তালিকা কমিটির কাছ থেকে পেয়েছি। একই ভাবে উপজেলার সব মাঠকর্মীই একটি করে নাম তালিকায় দিয়েছেন।

উপজেলার বাঐসোনা ইউনিয়নের মাঠকর্মী মো.সাইফুল লতিফের সাথে যোগাযোগ করা চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি।

উপজেলা প্রানি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. কবীর উদ্দিন আহমেদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, যথা সম্ভব যাচাই-বাছাই করে প্রনোদনার তালিকা তৈরী করা হয়েছে। তবে মানুষ মাত্রই ভূল থাকতে পারে।

কালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, প্রাণি সম্পদ বিভাগের প্রনোদনার তালিকার বিষয়ে আমি কিছু জানি না। বিষয়টিতে খোঁজ নেওয়া হবে।

© এই নিউজ পোর্টালের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

ফেসবুকে শেয়ার করুন

More News Of This Category
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin
error: Content is protected !!