স্টাফ রিপোর্টার:
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার জামরিলডাঙ্গা গ্রামের ৭৪ বছরের বৃদ্ধা সালেহা বেগমকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় পাল্টা-পাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছে বাদী ও আসামী পক্ষ। শনিবার নড়াইল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে একে অপরকে দায়ি করে এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
মামলার বাদি নিহত সালেহার কন্যা মিনি বেগম লিখিত অভিযোগে জানান, মামলার স্বাক্ষী নিহত সালেহার পুত্রবধু ও নিহত আরিফ খন্দকারের স্ত্রী কুলসুম বেগম ও অপর পুত্রবধু ইরুপ খন্দকারের স্ত্রী নারগিস বেগমকে কালিয়া থানা পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের নামে তাদের শারীরিক নির্যাতন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী আদায় করেছেন। শারীরিক নির্যাতনে নার্গিস অসুস্থ হয়ে পড়লে শুক্রবার তাকে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে তিনি তার মায়ের হত্যাকান্ডের প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে মামলার আসামী পক্ষের মিনা খাতুন সাংবাদিক সম্মেলনে তার বাবা, ভাই এবং তাদের বংশের ১১জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। বাদি পক্ষ নিজেরা হত্যাকান্ড ঘটিয়ে আমাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন, যার সত্যতা বেরিয়ে আসছে।
জানা যায়, জেলার কালিয়া উপজেলার পেড়লি ইউনিয়নের জামরিলডাঙ্গা গ্রামের নূর আলী খন্দকারের পূত্র আরিফ খন্দকার ২০২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাতে বাড়ী ফেরার পথে স্থানীয় প্রতিপক্ষের হাতে খুন হন। এ ঘটনায় নিহতের ভাই ইরুপ খন্দকার বাদি হয়ে স্থানীয় ২৩ জনের নামে কালিয়া থানায় একটি মামলা করে। ওই মামলার কিছু আসামি জামিনে বের হয়ে মামলা প্রত্যাহারের হুমকি দিয়ে আসছিল। মামলা প্রত্যাহার না করায় ২১ মে রাত ১টার দিকে আসামিরা বসতঘরের বারান্দার বেড়ায় আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় বারান্দয় ঘুমিয়ে থাকা পক্ষাঘাতগ্রস্থ শ্বাশুড়ী ছালেহা অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যায়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কালিয়া থানার ওসি (অপারেশন) মোঃ আমানুল্লাহ আর বারী জানান, শুক্রবার দুুপুরে নিহত সালেহা বেগমের পুত্রবধু আরিফ খন্দকারের স্ত্রী কুলসুম ও বৃহস্পতিবার দুুপুরে অপর পুত্রবধু ইরুপ খন্দকারের স্ত্রী নারগিস স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। তারা জিজ্ঞসাবাদেও এক পর্যায়ে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের নাম প্রকাশ করেছে। তিনি তাদেও শারীরিক নির্যাতনের কথা অস্বীকার করেন।
পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় নড়াইল নিউজ ২৪.কমকে বলেন, সালেহা বেগমকে পুড়িয়ে হত্যার মামলার দুই মহিলা স্বাক্ষী আদালতে স্বকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে কারা কারা এ হত্যার সাথে জড়িত তাদের নাম জানিয়েছে। তবে দুই মহিলা স্বাক্ষীকে থানায় নিয়ে জ্ঞিাসাবাদ করা হয়েছে কিন্তু তাদেও শারীরিকভাবে নির্যাতনের বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন।