বিশেষ প্রতিনিধি, নড়াইল নিউজ ২৪.কম
“নড়াইলে পুলিশের হয়রানি প্রতিবাদে ইজিবাইক চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে শ্রমিকরা” শিরোনামে নড়াইল নিউজ ২৪.কম এ বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় তেলেবেগুনে জ্বলছেন পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায়। বুধবার(২২ সেপ্টম্বর) দুপুরে সংবাদটি প্রকাশিত হয়।
সংবাদ প্রকাশের পর বুধবার রাত সাড়ে ৯ টার পরে সদর থানা ওসি অপারেশন শিমুল কুমার দাস প্রথমে ফোন করে থানায় যেতে বলে। পরে সদর থানা ওসির শওকত কবিরের সাথে কথা হয়। কি বিষয় জানতে পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায়ের সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে বলেন, আপনাকে তো ধরতে লোক পাঠিয়েছি। আপনার এতবড় সাহস হল কি করে পুলিশের বিরুদ্ধে নিউজ করেন। এখনই আমার সাথে এসে দেখা করেন প্রয়োজনে আপনার সভাপতি-সম্পাদককে সাথে নিয়ে আসেন।
বিষয়টি তাৎক্ষনিক নড়াইল প্রেসক্লাবের সভাপতি এনামুল কবীর টুকু এবং সাধারন সম্পাদক শামীমূল ইসলাম টুলুসহ অন্যদের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয়। নড়াইল প্রেসক্লাবের সভাপতি এনামুল কবীর টুকু এ বিষয়টি নিয়ে পুলিশ সুপারের সাথে কথা বললে বলেন, আমি তো আপনাকে আসতে বলিনি সভাপতি বলেন, আমরা (২৩ সেপ্টম্বরবৃহস্পতিবার) দেখা করার কতা বললে বলেন, না এখনই আসতে হবে ওকে (শরিফুল ইসলাম বাবলু) কে তুলে আনতে লোক পাঠিয়েছি।
পুলিশ সুপারের নির্দেশে সদর থানা ও ডিবি পুলিশের দুইটি গাড়ি রাত ১২ টার দিকে নড়াইল প্রেসক্লাবের সদস্য দেশ টেলিভিশন এর নড়াইল জেলা প্রতিনিধি এবং নড়াইল নিউজ ২৪.কম এর সম্পাদক ও প্রকাশক শরিফুল ইসলাম বাবলু বাড়িতে হানা দেয় তাকে আটক করার জন্য। পুলিশ এসময় ইজিবাইক শ্রমিক নেতা মাছুম জমাদ্দারকে সাথে নিয়ে যায়। সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম বাবলু বাসায় না থাকায় পুলিশ বাসার পাশে প্রায় ১৫-২০ মিনিট অবস্থান করে চলে যান।
এঘটনায় নড়াইল প্রেসক্লাব, নড়াইল জেলা টেলিভিশন জার্নালিষ্ট এ্যাসোসিয়েশনর সাংবাদিকসহ জেলায় কর্মরত সাংবাদিক সমাজ ফুসে ওঠেছে। তথ্য বহুল ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিকে ফোনে হুমকি এবং গভীর রাতে বাড়িতে পুলিশের অভিযানের তিব্র নিন্দা জানান।
উল্লেখ্য, গত বুধবার বেলা ১১টার দিকে পুরাতন বাস টার্মিনালে ইজিবাইক রেখে তারা এর প্রতিবাদ জানায়। বিষয়টি পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় জানতে পেরে ইজিবাইক সমিতির নেতাদের সাথে বৈঠকে বসেন।
এদিকে ইজিবাইক চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় সাধারন মানুষের ভোগান্তিতে পড়ে। ইজিবাইক চালকরা অভিযোগ করেন, পুলিশ আমাদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে। শহরের ঢুকতে গেলে বিভিন্নস্থানে বাধা দেওয়া হয়। নানান অজুহাতে ইজিবাইক চালকেদের গাড়ির চাবি নিয়ে যায়, পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে আটকে রাখে, এমনকি ২ থেকে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করে পুলিশ। সারাদিন কাজ করে যা আয় হয় তাই দিয়ে জরিমানা দিয়ে বাড়ি চলে যেতে হয়। পরিবার নিয়ে অনেক সময় খেয়ে না খেয়েও দিন পার করতে হয়।
নড়াইল সদর বহুমুখি ইজিবাইক সমবায় সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাছুম জমাদ্দার বুধবার বলেছিলেন, পুলিশ সুপার ৭দিনের সময় দিয়েছেন। এর মধ্যে জেলা আইন শৃংখলা সভায় ইজিবাইক নিয়ন্ত্রনে পদক্ষেপ নেওয়ার যে সিদ্ধান্ত হয়েছিল সেটি নিয়ে আলোচনা করে সমাধান করতে বলেছেন।
পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় বুধবার বলেছিলেন, জেলার আইন শৃংখলা সভায় পৌরসভায় দুই রং এ ইজিবাইক চালানোর কথা বলা হয়েছে। একেক দিন একক রং এর গাড়ি চলবে। প্রতিদিন ৩’শ গাড়ি চলাচল করবে। সেই সিদ্ধান্ত পুলিশ বাস্তবায়ন করছে। ইজিবাইক সমিতির নেতাদের সাথে কথা বলে ৭ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্তের বিষয়ে জেলা প্রশাসনের সাথে কথা বলে সমাধান করতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: