নড়াইল নিউজ ২৪.কম ডেস্ক:
দেশের বহুল আলোচিত গ্রাহকের করা মামলায় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল ও তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতের বিচারক আতিকুল ইসলাম রিমান্ডের এ আদেশ দেন।
এর আগে মামলাটির সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে দুই আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে ১০ দিনের হেফাজতে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক ওহিদুল ইসলাম।
আসামিপক্ষে ব্যারিস্টার মনিরুজ্জামান আসাদ রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে শুনানি করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, ‘আসামিরা কারও সঙ্গে প্রতারণা করেন নাই। তাদেরকে ভুল বুঝে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য করতে গেলে মানুষের সঙ্গে লেনদেন থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। সেই ব্যবসায়িক কারণকে কাজে লাগিয়ে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
‘আমরা সকল গ্রাহকের অর্ডারের মালামাল অবশ্যই পরিশোধ করব। কিন্তু দেরি হওয়ার কারণ দেখিয়ে মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করে আটক রাখাটা তো সমাধান নয়। তাই আসামিদের জামিন দেয়া হোক।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ৪৫ দিনের দিনের সময় নিয়ে মালামাল পৌঁছে দেয়ার শর্তে গ্রাহকদের নিকট থেকে পণ্য পাঠানোর অর্ডার নিয়ে থাকি। আমরা কাস্টমারের অর্ডার নেয়ার পর অন্য কোম্পানির কাছে মালামাল তৈরির অর্ডার দিয়ে থাকি। এরপর গ্রাহককে মালামাল পৌঁছে দিই।’
জবাবে রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর বলেন, ‘পাঁচ মাস পার হলেও মালামাল পৌঁছে দেন নাই। এরপর টাকা ফেরত চাইতে গেলে হুমকি দিয়েছেন।’
এ সময় আরও কয়েকজন আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষে রিমান্ড চেয়ে ও জামিনের বিরোধিতা করে শুনানি করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু।
শুনানিতে তিনি বলেন, ‘আসামিরা হাজার হাজার গ্রাহকের সঙ্গে ই-কমার্স ব্যবসার নামে প্রতারণা করেছেন। তারা যথাসময় গ্রাহকদের মালামাল দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। ফলে গ্রাহক ক্ষুব্ধ হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।
‘তারা হাজার হাজার কোটি টাকা এই নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের নামে প্রতারণা করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা (ইভ্যালি) অনলাইনে বিজ্ঞাপন দিয়ে এই ব্যবসা করছেন। এই ঘটনার পেছনে আরও কারা আছে, তা জানা দরকার।’
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন।
এর আগে দুপুর ২টার দিকে রাসেল ও শামীমা সিএমএম কোর্টে পৌঁছান। পরে বিকেল তিনটা তিন মিনিটে আদালতের কাঠগড়ায় তোলা হয় দুই আসামিকে।
বিকেল তিনটা ছয় মিনিটে মামলাটি শুনানির জন্য ডাকা হলেও আসামিপক্ষের আইনজীবী ফরোয়ার্ডিং দেখার জন্য সময় চান। পরে ফরোয়ার্ডিং দেখা হলে তিনটা ১০ মিনিটে শুনানি শুরু হয়।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের স্যার সৈয়দ রোডের বাসা থেকে বৃহস্পতিবার বিকেলে রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে র্যাবের সদরদপ্তরের সংবাদ সম্মেলনের পর দুজনকে গুলশান থানায় হস্তান্তর করা হয়। সেখান থেকে তাদের নেয়া হয় আদালতে।
আরও পড়ুন: রাসেল ই-ভ্যালিকে দেউলিয়া ঘোষণার পরিকল্পনা ছিল – র্যাব