নড়াইল নিউজ ২৪.কম আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রাশিয়ার ভোটদানের ক্ষমতা বাতিল করতে বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন গণহত্যার শামিল। এক সংক্ষিপ্ত ভিডিও বার্তায় রোববার জেলেনস্কি এসব কথা বলেছেন বলে জানায়, রয়টার্স।
জেলেনস্কি বলেছেন, এটি সন্ত্রাসবাদ। তারা ইউক্রেনীয় শহরগুলোতে আরও বেশি বোমা বর্ষণ করতে যাচ্ছে। তারা আরও বেশি চতুরতার সাথে আমাদের শিশুদের হত্যা করতে যাচ্ছে। আমাদের ভূমিতে একটি অশুভ শক্তি এসেছে, যাকে অবশ্যই ধ্বংস করা হবে। তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড গণহত্যার শামিল।’
রোববার অনলাইনে অপর এক পোস্টে ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেনের আবাসিক এলাকায় বোমাবর্ষণ করছে মস্কো। আগ্রাসী শক্তি পশ্চিমাপন্থী দেশটির আরও গভীরে আঘাত করতে চায়। ইউক্রেনে গত রাতটি ছিল অত্যন্ত নৃশংস। তারা আবাসিক এলাকায় বেসামরিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে একের পর এক গুলি, বোমাবর্ষণ করেছে।
তিনি বলেন, আজ দেশে এমন কোনো জিনিস নেই; যা দখলদাররা লক্ষ্যবস্তু হিসাবে আক্রমণ করছে না। তারা সবার বিরুদ্ধে লড়ছে। তারা জীবন্ত সবকিছুর বিরুদ্ধ লড়ছে। আগ্রাসী শক্তিরা কিন্ডারগার্টেন, আবাসিক ভবন এমনকি অ্যাম্বুলেন্সের বিরুদ্ধেও লড়াই করছে।
জেলেনস্কি বলেছেন, রুশ সৈন্যরা পুরো শহরের সব জেলায় রকেট এবং ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করছে। যেখানে কোনো সামরিক স্থাপনা নেই এবং কখনই ছিল না।
‘ইউক্রেনের ভাসিলকিভ, কিয়েভ, চেরনিগিভ, সুমি, খারকিভ এবং অন্যান্য অনেক শহরে এখন এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে; যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আমাদের ভূমিতে সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল।’
এদিকে, আগ্রাসনের চতুর্থ দিনে এসে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে হামলা জোরদার করেছে। ইতোমধ্যে নোভা কাখোভকা নামে দেশটির কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ একটি শহর দখলে নিয়েছে রুশ সৈন্যরা।
নিউ কাখোভকা নামেও পরিচিত এই শহরটি ছোট হলেও কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কাখোভকা শহরটি দিনিপার নদীর তীরে অবস্থিত এবং এই নদীটি পানি পথে সরাসরি ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এছাড়া ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত খেরসন শহর এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত বারদিয়ানস্ক শহর রুশ সেনারা পুরোপুরি অবরোধ করেছে বলে দাবি করেছে মস্কো।
অন্যদিকে, সংঘাতের অবসানে ইউক্রেনের সাথে আলোচনার জন্য রাশিয়ার পাঠানো প্রতিনিধিদের একটি দল বেলারুশে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে মস্কো। কিন্তু ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার আলোচনার এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।
তিনি বলেছেন, রাশিয়া যদি বেলারুশ ভূখণ্ড থেকে ইউক্রেনে হামলা বন্ধ করে তবে মিনস্কে আলোচনা সম্ভব হতে পারে। এছাড়া এই সংকটের সমাধানে অন্যান্য স্থানে আলোচনার দরজা খোলা রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলেনস্কি।
ইউক্রেনের এই প্রেসিডেন্ট বলেছেন, আপনার ভূখণ্ড থেকে যদি কোনো আগ্রাসী পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে আমরা মিনস্কে কথা বলতে পারি… অন্যান্য শহর আলোচনার স্থান হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। তিনি বলেন, আমরা অবশ্যই শান্তি চাই। আমরা সাক্ষাৎ করতে চাই। আমরা যুদ্ধ শেষ করতে চাই। আমরা আলোচনার স্থান হিসেবে ওয়ারসো, ব্রাতিসলাভা, বুদাপেস্ট, ইস্তাম্বুল, বাকুর নাম প্রস্তাব করেছি।