নড়াইল নিউজ ২৪.কম আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
আফগানিস্তানের পর্বতঘেরা প্রদেশ পাঞ্জশির তালেবান ও স্থানীয় যোদ্ধাদের মধ্যে তুমুল লড়াইয়ের প্রায় ২০ দিন পর স্বাভাবিক রূপে ফিরতে শুরু করেছে । সেখানকার রাস্তাগুলো খুলে দেয়া হয়েছে। টেলিফোন নেটওয়ার্কেও মেরামতের কাজ চলছে।পাঞ্জশিরের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কর্মকর্তা এবং বাসিন্দাদের বরাতে এ তথ্য দিয়েছে টলোনিউজ। অবশ্য বাসিন্দাদের অনেকে বলছেন, রাজ্যটিতে এখনও বিদ্যুৎ ফেরেনি।
স্থানীয় সাংবাদিক মোহাম্মদ ওয়াসি আলমাস বলেছেন, ‘টেলিকম নেটওয়ার্ক গতকাল থেকে কাজ করছে। বড় সমস্যা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন, যা এখনও সমাধান হয়নি।’
পাঞ্জশিরের বাসিন্দাদের কেউ কেউ বলছেন, গত কয়েক সপ্তাহে তালেবান ও স্থানীয় প্রতিরোধী বাহিনীর লড়াইয়ের মধ্যে সেখানকার বাসিন্দাদের ৯০ শতাংশই ঘর ছেড়ে পালিয়েছে। তারা পাহাড়-পর্বতের ঢালে আশ্রয় নিয়েছে। মারাত্মক সংকটে পড়েছে তারা।
পাঞ্জশিরের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে এক বাসিন্দা বলেন, ‘অর্থনৈতিক দুর্দশা দেখা দিয়েছে। মানুষজনকে অর্থনৈতিক সংকটের সঙ্গে লড়তে হচ্ছে।’
প্রদেশটির আরেকজন বাসিন্দা বলেন, ‘১০০ ভাগ মানুষের মধ্যে এখন ১০ ভাগ মানুষ এখানে বাস করছে। বাকিরা ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে।’
অবশ্য পাঞ্জশিরের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, প্রদেশটির পরিবেশ স্বাভাবিক আছে।
স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তা মৌলভি সানা সানগিন ফাতিহ বলেন, ‘নারী, শিশু ও সাধারণ মানুষের রক্ষা আমাদের দায়িত্বের বাধ্যবাধকতা। বিদ্যুৎ নেই, খাদ্য নেই- এসব যা বলা হচ্ছে তা মিথ্যা।’
গত ১৫ আগস্ট কাবুল দখলের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণে নিলেও পাঞ্জশির নিয়ন্ত্রণে নিতে পারছিল না তালেবান। তুমুল লড়াই শেষে গত ৬ আগস্ট আফগানিস্তানের সবচেয়ে ছোট প্রদেশটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় কট্টর ইসলামপন্থি সংগঠনটি।
প্রদেশটিকে তালেবান মুক্ত রাখার ঘোষণা দেন ‘পাঞ্জশিরের সিংহ’ খ্যাত আহমেদ শাহ মাসুদের ছেলে আহমেদ মাসুদ, কিন্তু সম্ভব হয়নি। প্রথমবারের মতো কোনো শক্তির কাছে পরাজিত হয় ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টের (এনআরএফ)।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের খবর, এনআরএফ প্রধান আহমেদ মাসুদ যুক্তরাষ্ট্রে একজন লবিস্ট নিয়োগ দিয়েছেন, যাতে তার বাহিনী লড়াই চালিয়ে যাওয়ার সহায়তা পায়।
আহমেদ মাসুদের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, লবিস্ট নিয়োগ দেয়ার উদ্দেশ্য, যুক্তরাষ্ট্র যাতে তালেবানকে স্বীকৃতি না দেয়, এ বিষয়ে নিরুৎসাহিত করা।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একই কাজ করে যাচ্ছে তালেবানও। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বৈধতা এবং অর্থ সহায়তা পেতে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে তারা।