স্টাফ রিপোর্টার, নড়াইল
নড়াইলের বি আর ডিবি উপ-পরিচালকের কার্যালয়। এখানে রাজস্ব পদে কাজ করেন ৩ জন। প্রকল্পের ২ জন। এছাড়া মাষ্টাররোলে কাজ করেন এক ঝাড়ুদার। উপ-পরিচালক অফিসের আয়ার জন্য একটি খরচ রয়েছে। সেখানে একজন আয়া প্রতিনিয়ত কাজ করেন। ঘরঝাড়ু,ঘরমোঝা থেকে শুরু করে সব কাজই তার। এর বিনিময়ে বেতন পান মাত্র এক হাজার টাকা। এভাবেই দীর্ঘদন ধরে চলছে নড়াইলের পল্লী উন্নয়ন বোর্ড এর নড়াইল উপ-পরিচালকের কার্যালয়ে।
খোজ নিয়ে জানা গেছে,২০২০ সালে নড়াইলে যোগদানের পরপরই এই অফিসে আয়ার নামে বেতন হয় আড়াই হাজার টাকা,বেতনের সীটে এবং চেকে একই পরিমান টাকা উল্লেখ করা হলেও আয়া বেতন হাতে পান মাত্র এক হাজার টাকা। অফিসের এহেন জালিয়াতি টের পেয়ে কাজ ছেড়েছেন চায়না নামের এক আয়া। চায়না বলেন“সুজিত স্যার আসার আগে যারা কাজ করতো তারা পুরো বেতনই পেতো। কাগজে স্বাক্ষর করি আড়াই হাজার আর হাতে দেয় এক হাজার। একবছর ধরে পুরোটা দেবার কথা বলে আর দেয়নি, রাগে চাকরী ছেড়ে দিয়েছি। এরা গরীব মানুষের টাকাই ভালো খেতে পারে”।
চলতি বছরের মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে চাকুরীতে যোগ দেন মুর্শিদা নামের আরেকজন। প্রাথমিক কথায় একহাজার টাকার কথা বলে তাকে নিয়োগ দেয়া হয়। মাস শেষে বেতনের কাগজে সই করতে গিয়ে দেখেন সেখানে লেখা আছে আড়াই হাজার টাকা। কর্মকর্তাকে এই ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে পরের মাসে বেতন বাড়িয়ে দেবার আশ^াস দেন। ৩ মাস ধরেই আড়াই হাজার টাকার কাগজে স্বাক্ষর করে আসছে সে। চলতি জুলাই মাসেও একই অবস্থায় একহাজার টাকা বেতন দেয়া হয় গরীব এই গৃহপরিচারিকা কে।
মুর্শিদা বলেন,এটা কোন ধরনের জালিয়াতি? আমার বেতন আড়াই হাজার অথচ দেয়া হচ্ছে মাত্র এক হাজার টাকা।আমাদের মতো গরীবের টাকা মেরে উনারা শান্তি পাবেন না। আমি এর বিচার চাই।
অফিসের পিয়নের বিশ্রামের জন্য শোবার একটি মূল্যবান খাটও ছিলো,সেটাও নিজ বাড়িতে নিয়ে গেছেন উপ-পরিচালক সুজিত,জানালেন অফিসের এক কর্মচারী।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই অফিসের একজন সাবেক কর্মকর্তা বলেন,এটা উপ-পরিচালকের এখতিয়ার। কিন্তু আরো অনেক খাত থাকা সত্ত্বেও গরীব মানুষের এই টাকা খাওয়াটা কেউ সমর্থন করে না।
বি আর ডিবির উপ-পরিচালক সুজিত কুমার বিশ্বাস বলেন,বাকি টাকা অন্য আরেকজনকে দেয়া হয়। একটু পরে কথা ঘুরিয়ে বলেন,বাকি টাকা দিয়ে ট্রয়লেট্রিজ দ্রব্য কেনা হয়। আপনার অফিসে কনটেজেন্সি বিল হয় না? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,ওটা আমরা তুলি না।