নড়াইল নিউজ ২৪.কম বিনোদন ডেস্ক:
আজ শনিবার (২অক্টোবর) জেমস এর জন্মদিন। পুরো নাম ফারুক মাহফুজ আনাম জেমস। এ বছর ৫৮ তে পা দেবেন জেমস। তার জন্ম ১৯৬৪ সালে, নওগাঁয়। বেড়ে ওঠা এবং সংগীতে জড়িয়ে পড়া চট্টগ্রামে।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলেছে তার গান, সেই গানের কথা। কখনও তিনি বলেন জেল থেকে, কখনও দেখান স্টেশন রোডের চিত্র। দুঃখিনীর কথা বলতে বলতে শোনান স্বপ্নচারিনী কবিতার কথাও। মা-বাবা কেউই বাদ যায়নি তার গান থেকে।
তিনি এক নাগরিক বাউল; তিনি নগর বাউল। যে নগর বাউল জেগে থাকে এই শহরে; কখনও রাস্তায় রাস্তায়, কখনও খোলা জানালায় বসে দেখেন জ্যোৎস্না আর সেই অনুভূতি প্রকাশ করেন গানে গানে।
তিনি প্রেমিক। তার হাতে থাকে ক্যামেলিয়া; তারায় তারায় রটিয়ে দিতে চান প্রিয় মানুষটির কথা। তিনি কারও কাছে গুরু, কারও কাছে নগর বাউল; তিনি জেমস, ফারুক মাহফুজ আনাম জেমস।
সারা দেশে অসংখ্য ভক্ত তার। তিনি এখন নতুন গান করেন না, কিন্তু যা রেখে গেছেন তাতেই এখনও তৈরি হয় নতুন প্রজন্মের শ্রোতার অনুভূতি, চেতনা। তাই জেমসের জন্মদিনে বরাবরই ভক্তদের বাড়তি উত্তেজনা থাকে।
বিগত বছরগুলোতে ভক্তদের সঙ্গে জন্মদিনের কেক কাটতেন তিনি, করতেন গল্প। কিন্তু করোনা সবকিছুই বদলে দিয়েছে।
তারপরও জেমসের কাছে তার ভক্তরাই, শ্রোতারাই শ্রেষ্ঠ। তাদের উদ্দেশ করে জেমস এক লাইনে বলেন, ‘যতদিন তোমরা আছ, ততদিন আমরা আছি।’
জন্মদিন উপলক্ষে এবার জেমসের সংস্পর্শে আসার সুযোগ নেই। করোনার কারণে জেমস নিজেও সামাগম এড়িয়ে যেতে চাইছেন বলে জানান তিনি।
জেমসের সহকারী রুবাইয়াৎ ঠাকুর রবিন বলেন, ‘বস বাসাতেই থাকবেন, হয়তো গানের প্র্যাকটিস করবেন।’
জন্মদিনে জেমসের কোনো আয়োজন না থাকলেও দেশজুড়ে জেমস ভক্তদের রয়েছে নানা আয়োজন। এর মধ্যে আছে দোয়া মাহফিল, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য খাবারের আয়োজন। ঢাকার পাশাপাশি খুলনা, যশোর, নরসিংদী, রংপুর, মেহেরপুর, কুড়িগ্রাম, ভোলা, পটুয়াখালীসহ বেশ কিছু জেলায় চলবে এ কার্যক্রম। মসজিদ ও মাদ্রাসায় হবে দোয়া। এসব কাজের উদ্যোগে রয়েছে জেমস ভক্তদের গ্রুপ ‘দুষ্টু ছেলের দল’।
সংগীতের জন্য ঘর ছেড়ে পালিয়ে যান চট্টগ্রামের আজিজ বোর্ডিং-এ। সেখানে থেকেই সংগীতের মূল ক্যারিয়ার শুরু। ১৯৮০ তে ব্যান্ড ফিলিংস তৈরি করেন, ১৯৮৭ সালে তার প্রথম অ্যালবাম ‘স্টেশন রোড’ প্রকাশ পায়।
জেমসের উল্লেখযোগ্য অ্যালবামগুলোর মধ্যে রয়েছে স্টেশন রোড (১৯৮৭), জেল থেকে বলছি (১৯৯০), নগর বাউল (১৯৯৬), লেইস ফিতা লেইস (১৯৯৮), কালেকশন অফ ফিলিংস (১৯৯৯), দুষ্টু ছেলের দল (২০০১)।
২০০৪ সালে ভারতীয় সংগীত পরিচালক প্রিতমের সুরে বলিউডে প্লেব্যাক করেন। চলচ্চিত্রে তার গাওয়া ‘ভিগি ভিগি’ গানটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় এবং এক মাসেরও বেশি সময় গানটি বলিউড টপচার্টের শীর্ষে ছিল। ২০০৭ সালে ‘রিশতে’ এবং ‘আলবিদা’ নামের দুটি হিন্দি ভাষার গান করেন তিনি।
সর্বশেষ এই শিল্পীকে ২০১৭ সালে সত্ত্বা সিনেমায় গাইতে দেখা যায়। সিনেমাটির ‘তোর প্রেমেতে অন্ধ হলাম’ গানটির জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পান তিনি।