নড়াইল নিউজ ২৪.কম ডেস্ক:
করোনাভাইরাসের নতুন ঢেউ মোকাবিলায় বিধিনিষেধের অংশ হিসেবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী বহন শুরু হবে। এজন্য বাড়তি ভাড়া গুণতে হবে না বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে এক বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান বিআরটিএর চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার। তিনি বলেন, ‘ভাড়া বৃদ্ধি যৌক্তিক মনে করছি না। বিদ্যমান ভাড়ায় গণপরিবহন চলবে।’
গত সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
তবে বিধিনিষেধের মধ্যেও সব সিটে যাত্রী বহনের দাবি জানান বৈঠকে বাস মালিক পক্ষের হয়ে অংশ নেয়া সংসদ সদস্য মশিউর রহমান রাঙা।
তিনি বলেন, ‘বিমান যেভাবে সব সিটে যাত্রী নেয়, সেভাবে আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব সিটে যাত্রী বহনের দাবি জানিয়েছি। চালক-শ্রমিকদের ভ্যাকসিন দেয়ার জন্য অগ্রাধিকার দেয়ার দাবি করছি। আমরা কোনোভাবেই ভাড়া বৃদ্ধি করতে চাই না।’
সব সিটে যাত্রী বহনের যৌক্তিকতা তুলে ধরে জাতীয় পার্টির এই নেতা বলেন, ‘অর্ধেক যাত্রী নিয়ে গাড়ি চললে সংকট হবে। হঠাৎ করে বাসের সংখ্যাও বাড়ানো সম্ভব হবে না।’
এর আগে ২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ার পর সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে গণপরিবহন বন্ধ করে দেয়া হয়। ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটি শেষে গণপরিবহন চালুর সিদ্ধান্ত জানালে অর্ধেক যাত্রী বহন করার নির্দেশ দেয়া হয়। জানানো হয়, নির্ধারিত ভাড়ার ৬০ শতাংশ আদায় করা যাবে।
গত বছরের ৫ এপ্রিল লকডাউন নামে পরিচিতি পাওয়া বিধিনিষেধ আসার আগে আবার বাসে অর্ধেক যাত্রী বহন করতে বলা হয়। তখনও ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়ানো হয়। ৫ এপ্রিল লকডাউন দেয়া হলে গণপরিবহন বন্ধ করে দেয়া হয়।
১ জুলাই থেকে শাটডাউন নামে বিধিনিষেধ দেয়া হলে আবার বন্ধ করে দেয়া হয় গণপরিবহন। পরে এই বিধিনিষেধ শিথিল করা হলে তৃতীয় বারের মতো অর্ধেক যাত্রী তোলে ৬০ শতাংশ ভাড়া আদায়ের সুযোগ দেয়া হয়।
তবে তিন বারেই দেখা যায়, প্রথমে দুই-এক দিন অর্ধেক যাত্রী তুললেও পরে প্রতি আসনেই যাত্রী তোলা হয়, এমনকি দাঁড়িয়েও যাত্রী নেয়া হতে থাকে। তবে ভাড়া ঠিকই ৬০ শতাংশ বেশি আদায় করা হতে থাকে। এই অবস্থায় একপর্যায়ে অর্ধেক যাত্রী বহনের নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।
গত নভেম্বরে ডিজেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর পর বাস ভাড়া এমনিতেই বেড়ে গেছে। সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ২৬ থেকে ২৭ শতাংশ ভাড়া বাড়িয়ে কিলোমিটার প্রতি যে ভাড়া নির্ধারণ করেছে, ওয়েবিল নামে এক বিশেষ কৌশলে ঢাকায় আদায় হচ্ছে এর দ্বিগুণ থেকে তিন গুণ।
এর মধ্যে যখন আবার বিধিনিষেধের কথা আলোচনা হচ্ছিল, তখন মানুষের মধ্যে বাস ভাড়া বাড়ার বিষয়টি নিয়েও উদ্বেগ তৈরি হয়।
প্রসঙ্গত, গত বছরের নভেম্বরের শুরুতে বাস ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল প্রায় ২৮ শতাংশ। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে ওই সময় বাস ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল।
২০২০ সালে বিধিনিষেধ চলাকালে প্রথম দফায় ৬৮ দিন বাসসহ সবধরনের গণপরিবহন বন্ধ ছিল। সে বছরের ১ জুন থেকে আসনের অর্ধেক যাত্রী নিয়ে বাস চলাচল শুরু হয়। মালিকদের প্রস্তাবে ওই বছর ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল বাস মিনিবাসে। গত বছর ভাড়া বাড়িয়ে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেছিল বাস মালিকরা।