নড়াইল নিউজ ২৪.কম বিনোদন ডেস্ক:
হত্যাকান্ডের স্বিকার চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুর গ্রামের বাড়ি বরগুনার আমতলীতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মেয়েকে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ফাঁসির দাবি করেছেন শিমুর বাবা নুরুল ইসলাম। শিমুর বাবা নুরুল ইসলাম তার মেয়ে হত্যার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানান।
গত ১৭ জানুয়ারি রাত ১০টার দিকে ছেলের ফোন পেয়ে ও টেলিভিশনের খবরের মাধ্যমে জানতে পারেন মেয়ে শিমু হত্যার ঘটনা।
কান্নাজড়িত কন্ঠে শিমুর বাবা নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার মাইয়াডারে অনেক আদর স্নেহ দিয়ে বড় করেছি, হেই মাইয়াডারে ওরা মাইর্যা ফালাইছে। আমি আর কিছু চাই না শুধু আমার মাইয়াডারে যারা হত্যা করেছে তাদের ফাঁসি চাই।’
ঢাকাই ছবির নায়িকা শিমুর গ্রামের বাড়ি আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের উত্তর তক্তাবুনিয়া গ্রামে। তার নানার বাড়িও একই উপজেলার তারিকাটা গ্রামে।
স্থানীয়রা জানান, ১৯৯৫ সালে শিমুর বাবা নুরুল ইসলাম রাঢ়ী গ্রামের বাড়ি ছেড়ে স্ত্রী, দুই ছেলে হারুন অর রশিদ ও সাইদুল ইসলাম খোকন এবং দুই মেয়ে শিমু ও ফাতেমাকে নিয়ে আমতলী পৌর শহরের ফেরিঘাটের সবুজবাগ এলাকায় বসবাস শুরু করেন।
শিমু আমতলী এমইউ বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাশ করেন। স্কুলে লেখা-পড়া করার সময় থেকেই শিমু সংস্কৃতিমনা ছিলেন। অভিনয়, নাচ ও গানের প্রতি তার ঝোঁক ছিল তীব্র। আমতলীর বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া শিমুর অভিনয়, নাচ ও গানের প্রশংসা সে সময় মানুষের মুখে মুখে ছিল।
পারিবারিক কোনো কারণে ১৯৯৬ সালে শিমুর মা রাশেদা বেগম সন্তানদের নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন। এরপর পরিচয় হয় চিত্রপরিচালক কাজী হায়াৎ এর সঙ্গে। তার হাত ধরেই ১৯৯৮ সালে সিনেমা জগতে আসেন শিমু।
এরপর রূপালী পর্দায় শিমু হয়ে যান রাইমা ইসলাম শিমু। একের পর এক বিভিন্ন সিনেমায় অভিনয়ের পর শিমুর নাম ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে।
শিমুরা ঢাকায় বসবাস করলেও বিভিন্ন কারণে তার বাবা গ্রামের বাড়িতেই থেকে যান। পরবর্তী সময়ে নিজেদের বাড়ি ছেড়ে তিনি একই ইউনিয়নের হলদিয়া গ্রামে বসবাস শুরু করেন। ওই গ্রাম থেকেই তিনি একবার ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
এ দিকে আলোচিত চিত্র নায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুর মরদেহ উদ্ধারের পর থেকেই বরগুনা ও আমতলীতে শোকের ছায়া নেমে আসে। সকলের প্রশ্ন একটাই, কী এমন ঘটলো যে আমতলীর কৃতি সন্তান শিমুকে নারকীয়ভাবে খুন করে মরদেহ টুকরো করে তা বস্তায় ভরে রাস্তার পাশে ফেলতে হবে।
জেলাবাসীর দাবি, শিমু হত্যায় যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ফাঁসি হোক।
এর আগে গত রোববার থেকে হঠাৎ করেই পাওয়া যাচ্ছিল না অভিনেত্রী রাইমা ইসলাম শিমুকে। খোঁজ না পেয়ে তার ছোট বোন ফাতেমাসহ পরিবারের সদস্যরা কলাবাগান থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। সোমবার দুপুরে কেরানীগঞ্জ থেকে শিমুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
মরদেহটি প্রথমে অজ্ঞাত হিসেবেই ধরা হচ্ছিল। পরে আঙুলের ছাপ ও পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে জানা যায় বস্তাবন্দি মরদেহটি শিমু।
ঘটনার রাতেই শিমুর স্বামী খন্দকার শাখাওয়াত আলীম নোবেল ও তার বাল্যবন্ধু এসএমওয়াই আব্দুল্লাহ ফরহাদকে আটক করে পুলিশ। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাহিনীটি জানতে পেরেছে, পারিবারিক ও দাম্পত্য কলহের কারণে জীবন দিতে হয়েছে শিমুকে। এই হত্যার কথা স্বীকার করেছেন নোবেল। বন্ধুকে নিয়ে মরদেহটি গুম করার চেষ্টা করেছিলেন তিনি।